মানুষ ভরে গোপনে ট্রাক যাচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে

লকডাউন উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম থেকে ট্রাকে মানুষ ভরে গোপনে গাড়ি যাচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে। আবার এসব উপজেলা থেকে বিনাপ্রয়োজনে চট্টগ্রাম নগরীতে ঢুকছে শত শত মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের লকডাউন পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে পরিচালিত অভিযানে এই চিত্র ধরা পড়ে।

এ বিষয়ে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, অভিযানের সময় কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকায় প্রচুর লোক সমাগম দেখা যায়। সিএমপি নির্দেশ অমান্য করে জরুরি পণ্য ও সেবা পরিবহন ছাড়া অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রচুর প্রাইভেট কার, মোটরবাইক চলাচল করতেও দেখা যায়। এমনকি পিকআপ গাড়ি ও ট্রাকে পণ্য পরিবহনের পরিবর্তে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছিল। এসব পিকআপ ও ট্র্যাক পটিয়া, আনোয়ারা, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশে অভিমুখে যেতে দেখা যায়। আবার অবাধে ব্রিজ দিয়ে মানুষ বিনাপ্রয়োজনে ঢুকছে চট্টগ্রাম মহানগরীতে।

তিনি বলেন, এসব অপরাধ বিবেচনায় ৭টি মামলায় ৩৫ জন জনকে ১৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে, বাজার মনিটরিং, নদীর ঘাট ও জেটিতে সীমিত চলাচল, অননুমোদিত দোকান বন্ধ রাখা, ওএমএস চাল বিক্রিতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাসহ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দিনভর অভিযান পরিচালনা করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ১০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। এসব অভিযানে ৬২ মামলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক এই অভিযান পরিচালিত হয়।

নগরীর কোতোয়ালী, সদরঘাট ও ডবলমুরিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন। অভিযানে আন্দরকিল্লায় তাজ সার্জিক্যালে মাস্ক, গ্লাবস ও স্যানিটাইজারের অতিরিক্ত দাম রাখায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব না মানায় ৩ জনকে ১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বিনতে আমিন নগরীর পাঁচলাইশ, খুলশী ও বায়েজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২টি হার্ডওয়্যারের দোকানকে ২ হাজার টাকা, চায়ের দোকানে আড্ডাবাজির জন্য দোকানি ও ক্রেতাদের ২ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

নগরীর বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা থানাধীন এলাকায় পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ। এসময় একটি বোটে ১৯ জন বহন করায় বোটটি জব্দ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে ৬টি মামলায় ৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন তিনি।

অপরদিকে, নগরীর আকবরশাহ, পাহাড়তলি, হালিশহর এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম। অভিযানে ৬টি মামলার মাধ্যমে ২ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা চান্দগাঁও, চকবাজার, বাকলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ৭টি মামলায় ৬ হাজার ৭০০ জরিমানা করেন।

বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাহাড়তলী বাজারে প্রদর্শিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে চাল বিক্রয়ের অপরাধে খাজা স্টোরকে ৫ হাজার, ইয়াসিন স্টোরকে ৫ হাজার, হালিশহর এ-ব্লকে গাউসিয়া সুইটসকে ৫ হাজারসহ মোট ৯টি মামলায় ১৭ হাজার ৪০০ টাকা অর্থদন্ড করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরি।

পাঁচলাইশ, খুলশী, বায়েজিদ এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কায়সার খসরু ৩টি মামলায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন।

সদরঘাট, কোতায়ালী ও ডবলমুরিং থানা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে ৯টি মামলায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা অর্থদন্ড করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক।

এছাড়াও বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানা ৪টি মামলায় ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!