ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডারে ভক্তের মিলনমেলা

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার শরীফে ৩দিনব্যাপী ওরশের দ্বিতীয় দিনে ভক্ত-আশেকান ও মুরিদদের আগমনে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ও এর আশপাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সাজ সাজ রব পুরো এলাকা জুড়ে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার শরীফে ৩দিনব্যাপী ওরশের আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) শেষ দিনে ভক্ত-আশেকান ও মুরিদের আগমনে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ও এর আশপাশ এলাকায় ভক্তদের সমাগম হয়েছে।

জিকির, মাইজভাণ্ডারী গান, মিলাদ মাহফিলে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো এলাকা। মহান আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে অশ্রুসিক্ত নয়নে মোনাজাত করছেন দরবারি আশেক ভক্তরা। বুধবার দুপুর ১২টায় পবিত্র রওজা শরীফের গোসলের মধ্য দিয়ে ওরশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ওরশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তসহ ভারত, মায়ানমার, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভক্তরা মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে আসতে শুরু করেছেন। তাদের সেবায় কাজ করছে দরবার শরীফের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। শুক্রবার (১০ মাঘ) ওরশের প্রধান দিবস। এ দিন গাউছুল আজম হযরত মওলানা শাহ্ ছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর ওফাত দিবস। মাইজভাণ্ডার গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিল, রহমানিয়া মঞ্জিল, গাউছিয়া হক মঞ্জিলের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সুবিধার্থে রেলের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মাইজভাণ্ডার গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের মওলানা শাহছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘দরবার শরীফের প্রাণপুরুষ গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী হযরত মওলানা শাহছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) মানুষের মনে খোদাপ্রেম জাগ্রত করার শিক্ষা ও দীক্ষা দিয়ে গেছেন। তার আল্লাহ প্রদত্ত আধ্যাত্মিক শক্তির পরশে মানুষ আজ আলোর পথের পথিক।’

গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী হযরত মওলানা শাহ সুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) ১২৩৩ বাংলা ১ মাঘ জন্ম গ্রহণ করেন। ১৩১৩ বাংলা সনের ১০ মাঘ ৭৯ বছর বয়সে ওফাত লাভ করেন। তিনি শেখ সৈয়দ আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরি লাহোরীর (রহ.)তরিকত ছিলেন। অন্যদিকে পীরে তরিকতের বড়ভাই হযরত শাহ সৈয়দ দেলাওয়ার আলী পাকবাজের (রহ.) কাছ থেকে কুতুবিয়তের ফয়েজ অর্জন করেন। এরপর ১৮৫৭ সাল থেকে তরিকতের নির্দেশে হযরত গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী (ক.) নিজ গ্রাম মাইজভান্ডারে ফিরে আসেন। সেখানে ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই তার আধ্যাত্মিক শক্তির কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তার দরবারে ভিড় জমান। তখন থেকেই ‘মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ’ হিসেবে এর সুনাম বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। ওফাতের পরও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে এসে ভক্তরা আশা পূরণের জন্য নজর-মানতসহ আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন। গাউছিয়া রহমানিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশিন শাহসুফি হয়রত মাওলানা ছৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘আল্লাহর নবী রাসুলের নৈকট্য লাভের লাভের এবং কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক জীবনের জন্য ভক্তরা মাইজভাণ্ডার দরবারে আসেন।’

এএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!