পিটিয়ে মারা মেছোবাঘ কাঁধে নিয়ে যুবকদের উল্লাস বাঁশখালীতে

মাত্র দুদিন আগে ভারতের কেরালায় অন্তঃসত্ত্বা হাতি হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে মূলধারার গণমাধ্যমেও আলোচনার ঝড় বইয়ে যাচ্ছে। আলোচনা-সমালোচনায় মেতেছেন বাংলাদেশের নেটিজেনরাও।

অথচ তারও একদিন আগে বুধবার (৩ জুন) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে একটি মেছোবাঘ। শুধু তাই নয়, মৃত মেছোবাঘটিকে কাঁধে নিয়ে উল্লাস করে স্থানীয় কিছু যুবক। শুক্রবার (৫ জুন) ওই যুবকেরা মৃত মেছোবাঘের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ‌্যম ফেসবুকে প্রকাশ করলে নির্মম এই ঘটনার কথা জানা যায়।

মেছো বাঘ হত্যা করে উল্লাস করা স্থানীয় যুবক হান্নানের সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘বাঘমারা গ্রামটি জঙ্গলের পাশে। অনেকদিন ধরে মেছো বাঘটি দেখা যাচ্ছে। অনেকে এটাকে দেখেছে। গরু-ছাগলের ক্ষয়ক্ষতি করে যাচ্ছে। গত বুধবার এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে এটাকে হত্যা করা হয়।’

মেছোবাঘ হত্যার বর্ণনা দিয়ে হান্নান আরও বলেন, ‘সকাল ১১টায় ওটাকে দেখতে পেয়ে সবাই মিলে পুরো দিন চেষ্টা করে ধরতে ধরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে মেছো বাঘটি জঙ্গলে লুকিয়ে আশ্রয় নিলে ঘাড়ে লাঠির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বাঘটি৤ এরপরই সবাই মিলে পিটিয়ে মেছোবাঘটিকে হত্যা করি আমরা।’

এমন নির্মমভাবে মেছোবাঘটি পিটিয়ে হত্যার পর উল্লাস কেন— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পুরো দিন চেষ্টা করে অবশেষে মারতে পারলাম। তাই সবাই মিলে উল্লাস প্রকাশ করেছে।

তবে আরও দুটি মেছোবাঘ ওই জঙ্গলে আছে বলে জানান হান্নান নামের ওই যুবক।

এদিকে বাঁশখালীর বাঘমারা গ্রামে এলাকার লোকজন পিটিয়ে একটি মেছো বাঘকে হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রমিজ মেম্বার।

বাঁশখালী উপজেলার জলদী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘একটি মেছো বাঘ হত্যা করা হয়েছে। কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, তদন্তও চলছে। দুই-একদিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে জড়িতদের বনবিভাগ থেকে মামলা দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার জানান, ‘এটি গত ৩ জুন রাতের ঘটনা৤ মেছো বাঘ হত্যার বিষয়টি জানার পর বনবিভাগকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বনবিভাগের কর্মকর্তারা অনুসন্ধান করে যারা মেছোবাঘ হত্যায় যারা সম্পৃক্ত, তাদের শনাক্ত করেছে। বর্তমানে এটি মামলার প্রক্রিয়াধীন। যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!