চারদিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে চট্টগ্রাম। নগরীর নিম্নাঞ্চলের বাসাবাড়ির নিচতলা ডুবে গেছে পানিতে। অনেক বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলছে না, বিপর্যস্ত জনজীবন। সড়কে কোমড় থেকে বুক পর্যন্ত পানি। অন্যদিকে ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের শঙ্কায় হয়েছে হাজার হাজার পরিবার। বলা যায়, এখন চট্টগ্রাম এক দুর্ভোগের নগরী।
নগরবাসী অসহনীয় ভোগান্তিতে থাকলেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নিশ্চুপ রয়েছেন। মানুষের পাশে নেই তিনি। চট্টগ্রামকে পানিতে রেখে মেয়র রেজাউল ঢাকায় গেলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। এছাড়া চট্টগ্রাম পানিবন্দি থাকার এই চারদিন তৎপর দেখা যায়নি তাকে। এনিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে চট্টগ্রামের পানিবন্দি ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। খোদ সিটি কর্পোরেশন মেয়রের পোস্টেও ক্ষোভ ঝাড়লেন অনেকেই।
সোমবার (৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন সিটি কর্পোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
মেয়রের ওই পোস্ট একজন লিখেছেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষরে পানির তলে রেখে সৌজন্য সাক্ষাৎ মারাচ্ছেন? আগে মানুষ হওয়া উচিত ছিল, আপনার তারপর মেয়রের পদে দাঁড়াতেন।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘যদি ন্যূনতম লজ্জাবোধ থাকতো আপনার, তাহলে আপনি চট্টগ্রাম না থেকে ঢাকা যাইতেন না।’
ইফতিয়াজুল আলম কাজল নামে একজন লিখেছেন, ‘মাননীয় মেয়র সাহেব, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আপনার সৌজন্য সাক্ষাৎ কি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল নাকি পানিতে ডুবে থাকা চট্টগ্রামবাসীর পাশে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? আপনি তো দীর্ঘদিন রাজনীতি করা মানুষ, রাজনীতি তো মানুষের পাশে থাকাকে বুঝায়। এই দুর্দিনে মানুষের পাশে থাকা কি আপনি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন নি? তবে ঢাকায় বসে ড্রোন দিয়ে জলবদ্ধতার সার্বিক পরিস্থিতির খবর রাখছেন এমন বক্তব্য দিলেও বিচলিত হবো না!’
শ্রী জয়দেব দাশ নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘সিডিএ এর নামে অভিযোগ দিতে গেসে মেয়র সাব।’
রুবায়েত ইসলাম রবিন নামের একজন লিখেছেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষ ভালো নেই আর আপনি ঢাকায় বসে আছেন বাহ সুন্দর।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘লজ্জা শরম নাই রে!’
এদিকে নগরীর বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মুরাদপুর, শুলকবহর, খাজা রোড, খতিবের হাট, রাহাত্তরপুল, মিয়া খান নগর, কে বি আমান আলী সড়ক, সৈয়দ শাহ সড়ক, বারইপাড়া, মৌলভীপুকুর পাড়, চকবাজার, ডিসি সড়ক, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, আল ফালাহ গলি, পূর্ব বাকলিয়ার পুলিশ বিট, মাজার গেট, বড় কবরস্থান, খরমপাড়া, ফুলতলা, ঘাসিয়াপাড়া, চেয়ারম্যানঘাটা, বাংলা কলেজ, জে এম সেন হল এলাকা, পাঠানিয়া গোদা, সানোয়ারা আবাসিক, ফরিদারপাড়া, শমসেরপাড়া, হালিশহরের এল ব্লক, শ্যামলী আবাসিক এলাকা, হালিশহর পুলিশ লাইন, হালিশহর শাপলা আবাসিক এলাকা, শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, আনন্দবাজার, হাজীপাড়া, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, ঈশান মিস্ত্রির হাট, অক্সিজেন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট, অলিগলি—এমনকি ঘরের ভেতরেও পানি উঠেছে।
আরএম/ডিজে