পশুখাদ্যের ছোট ব্যবসায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা

কথা হয় সাগরিকা গরু বাজারের কাঁচা ঘাস ও শুকনো খড়বিক্রেতা জাহাঙ্গীরের সাথে। তিনি বলেন, আমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। শহরে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করি। একটু লাভের আশায় কয়েকদিন ধরে পশুখাদ্য ও লতাপাতার ব্যবসা শুরু করেছি। আজ দুই হাজার আয় হলো, বিক্রি ভালই হচ্ছে। এই ব্যবসা থাকবে রোববার পর্যন্ত। কুরবানি হয়ে গেলে আবার সবজি বিক্রি করব।

কোরবানি ঈদকে উপলক্ষ করে ফল ব্যবসায়ী, সবজি বিক্রেতা, ভ্যানচালকসহ নানা পেশার মানুষ সামান্য লাভের আশায় এক সপ্তাহের জন্য পশুখাদ্য ও লতাপাতা বিক্রি করছেন।ফুটপাতের অনেক শিশুও ১০-২০ টাকা আঁটি কাঁঠাল পাতা বিক্রি করছে।

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বিক্রি বেড়েছে পশুখাদ্যের। চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পশুর হাটসহ বাজারের আশেপাশেই পশুখাদ্য নিয়ে বসেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার (৯ আগস্ট) নগরীর বিভিন্ন পশুর হাট ও এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা কাঁচাঘাস, শুকনো খড়, খৈল-ভুষি ছাড়াও কাঁঠালপাতা বিক্রি হচ্ছে।

বিবিরহাট বাজারের গো-খাদ্য বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন জানান, আঁটি প্রতি কাঁচা ঘাস ২০-৪০ টাকা, শুকনো খড় ২০-৩০ টাকা , কাঁঠালপাতা ৩০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গরুর ভূঁষি কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা, খৈল ৮০, তুষ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলাউদ্দিন মূলত একজন মাছ ব্যবসায়ী। কোরবানি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে গরুর খাদ্য সমগ্রী বিক্রি করছেন। প্রথম দিনে তার ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাজারের আশেপাশেই পশুখাদ্য নিয়ে বসেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
বাজারের আশেপাশেই পশুখাদ্য নিয়ে বসেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

পোস্তারপাড় ছাগল বাজার অপর খড় বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন,আমরা কয়েকজন সবজি বিক্রেতা মিলে এ ব্যবসা শুরু করছি।অল্প পুঁজিতে ভালই ব্যবসা হচ্ছে। গরুর পাশাপাশি ছাগলের খাদ্যেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বেলা ৩টার দিকে নগরের বিবিরহাট গরুর বাজার থেকে গরু কিনে বের হচ্ছিলেন হামজারবাগ এলাকার সেলিম। তার সঙ্গে ছিল তার দুই ভাগ্নে। তিনি কিনলেন গরুর জন্য ভূঁষি ও কুড়া। তিনি বলেন, কোরবানের আরোও দুদিন বাকি তাই গরুকে খাওয়ানোর জন্য এসব কিনে নিলাম। শুকনো খড়ও কিনবো। কাল গরুর খাদ্যের আরোও দাম বেড়ে যেতে পারে তাই বেশি করেই কিনে নিলাম।

এদিকে, কোরবানি উপলক্ষে রাস্তায় চাটাই আর গাছের গুঁড়িও বিক্রি করছেন অনেকে। চাটাই বিক্রেতা তালেব বলেন, সপ্তাহখানেক আগে রাউজান থেকে এসব পণ্য নিয়ে এসেছেন তিনি। দশ বছর যাবত কোরবানির ঈদে চট্টগ্রামে তিনি এ ব্যবসা করেন। গরু কেনার পর মানুষ মাংস কাটার জন্য চাটাই, গাছের গুঁড়ি কেনেন। ঈদের এক-দুইদিন আগে এসব পণ্যের ব্যবসা বেশি হয় বলে জানান তিনি।

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বিক্রি বেড়েছে পশুখাদ্যের।
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বিক্রি বেড়েছে পশুখাদ্যের।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে আকারভেদে গাছের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩৫০ টাকায়, টুকরি বিক্রি হচ্ছে ৬০-১০০ টাকায় আর চাটাই বিক্রি হচ্ছে ১০০-২০০ টাকায়।

প্রসংগত, এবার চট্টগ্রাম নগরীতে তিনটি স্থায়ী পশুর হাটের পাশাপাশি আরও ছয়টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দিয়েছে সিটি করপোরেশন। ছয়টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে রয়েছে– স্টিল মিল পশুবাজার, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ পশুবাজার, কমল মহাজন হাট পশুবাজার, বাকলিয়ার কর্ণফুলী বাজার, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন বাজার এবং পতেঙ্গার প্রজাপতি পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের মাঠ। স্থায়ী তিন পশুর হাট হচ্ছে– সাগরিকা গরু বাজার, বিবিরহাট গরু বাজার ও পোস্তারপাড় ছাগল বাজার।

উল্লেখ্য, সোমবার (১২ আগস্ট) সোমবার জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহা। এই দিনে মুসলিমরা স্রষ্ট্রার সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি দিবেন।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!