নিজের জমিতে ‘দাঁড়াতে’ গিয়ে বিপাকে মহিউদ্দিন বাচ্চু

নগরীর খুলশী গার্ডেন ভিউ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় বায়নাসূত্রে জমিটি কিনেছেন চট্টগ্রাম নগর যুবলীগ আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। এই সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিজে এসে এই জমি সনাক্ত করে দিয়েছে সোসাইটির বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে। যার কাছ থেকে মহিউদ্দিন বাচ্চু এই জমি কিনেছেন তারও কোনো আপত্তি নেই। অভিযোগ উঠেছে, যখনই ওই জমিতে মহিউদ্দিন বাচ্চু দিতে গেলেন সাইনবোর্ড, নির্মাণ করতে গেলেন কেয়ারটেকারের ঘর, তখন ‘উল্টে’ গেলেন জমির উদ্দিন। জমির এখন অভিযোগ তুলে বসলেন, ‘মহিউদ্দিন বাচ্চু জমি দখল করছেন।’

এ বিষয়ে খুলশী গার্ডেন ভিউ হাউজিং সোসাইটির সভাপতি ইরশাদ আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘জায়গাটি জমির উদ্দিনই মহিউদ্দিন বাচ্চু সাহেবকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখন সেটা নিয়ে উনি আপত্তি তুলেছেন আবার। আমরা ৯ সদস্যের কমিটি করেছি এ বিষয়টি সমাধান করতে। দুই পক্ষকে কাগজপত্র জমা দিতে বলেছি। কমিটি কাগজপত্র যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিবে।’

সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এসএম বজলুর রশিদ জানান, ‘জমির উদ্দিন গত রমজানে মহিউদ্দিন বাচ্চুকে সকলের উপস্থিতিতে জমিটা সনাক্ত করে দিয়েছে। এখন কেনা জমিতে কেউ সীমানা দিতে গেলে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকে না হাউজিং কর্তৃপক্ষের। অনেকেই প্লটগুলোতে কাজ করছে। আর কাগজপত্র যাচাই করতে কমিটি করা হয়েছে। উভয়পক্ষকে কাগজপত্র জমা দিতেও বলা হয়েছে। রোববার (১৪ জুন) দুই পক্ষকেই চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।’

এদিকে সোসাইটির একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, ৭ জুন সোসাইটি জমির উদ্দিন ও মহিউদ্দিন বাচ্চুর ৫ কাঠা জমি নিয়ে সভা আহবান করে। সে সভায় দুই জনকেই উপস্থিত থাকতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে জমির উদ্দিন আসেননি। উনি ম্যানেজারকে পাঠিয়েছেন। অসুস্থতার কথা বলে সোসাইটির সভায় উনি আসতে না পারলেও প্রেসক্লাবে গিয়ে উনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঠিকই। ওনার মূল সমস্যা তাহলে জমি নিয়ে নয়, ওনার সমস্যা রাজনৈতিক বলেই সবাই মনে করছেন। না হয় যেখানে সমাধান হবে সেখানে উনি না এসে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলেন কেন। যে জমি উনি সকলের উপস্থিতিতে নিজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন সে জমি নিয়ে উনিই আবার আপত্তি তুলছেন মিডিয়ায়।

খুলশী গার্ডেন ভিউ হাউজিং সোসাইটির কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ২০ একর জমির ২৫০টি প্লট নিয়ে খুলশী থানার মুরগীর ফার্ম এলাকায় গার্ডেন ভিউ হাউজিং সোসাইটি নামে একটি আবাসিক এলাকা তৈরি হয় ২০০০ সালে। এসএম জমির উদ্দিন ও মো. আলমগীর নামে দুই ব্যক্তি প্রকৃত মালিক থেকে ‘পাওয়ার অব এটর্নি’ নিয়ে জমিগুলো বিক্রি করে আসছেন।

এসব জমির মধ্যে মহিউদ্দিন বাচ্চু প্রায় ২ একর জমি (৯৫ গন্ডা) বায়না করেন। জমিগুলো তিনি বায়না করেন মো. আলমগীরের কাছ থেকে। কিন্তু ৫ কাঠার একটি জমি বুঝিয়ে দেওয়া নিয়ে সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জমির উদ্দিনের সঙ্গে নগর যুবলীগ আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরোধ তৈরি হয়।

এ বিষয়ে মহিউদ্দিন বাচ্চু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাকে সোসাইটির সকলের সামনে জমির উদ্দিন জমি বুঝিয়ে দিয়েছেন। যখনই ওই জমিতে সাইনবোর্ড দিতে গেলাম তখন তিনি গণমাধ্যমে মিথ্যাচার শুরু করলেন। কেয়ারটেকারের জন্য এখন সেখানে ছোট একটা ঘরের কাজ চলছে।’

বাচ্চু বলেন, ‘রাজনীতি করি বলে আমার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে মিথ্যাচার করলে মানুষের কাছ থেকে তার সিম্পেথি আদায় সহজ হবে- এই আশায় তিনি এসব করে বেড়াচ্ছেন। তাছাড়া আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও জমিরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এসব অপপ্রচার চালাতে।’

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে জমির উদ্দিনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!