ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ ফটিকছড়ি থানার ওসি তদন্তের বিরুদ্ধে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

তিনি বলেছেন, ‘আদম- হাওয়া মাদক না খেলে আমাদের দুনিয়াতে আসতে হতো না’। মাদকের পক্ষে ছাফাই গাইতে গিয়ে হযরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (র.) মাদক খেয়েছেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন পুলিশ পরিদর্শক আরিফ।

অথচ ইসলামি স্কলাররা বলছেন, আদম হাওয়া জান্নাতে ছিলেন। সেখানে গন্ধম ফল খেয়েছেন বলে দুনিয়াতে এসেছেন। এর বাইরে কোন ঘটনা ইসলামে উল্লেখ নেই।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ফটিকছড়ি কিপাইতনগর স্কুল মাঠে সচেতন নাগরিক সমাজ আয়োজিত মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমান মাদক বিরোধী সমাবেশে।

এতে সভাপতিত্ব করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। পুলিশ পরিদর্শকের এমন বক্তব্যে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন বক্তব্য মোটেও উচিত হয়নি। এতে বুঝা গেল তাঁর ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব রয়েছে।

এটিএম পেয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, আমি অনুষ্ঠানে থাকা অবস্থায় আরিফের এমন বক্তব্য খেয়াল করিনি। আমাকে বেশ কয়েকজন আলেম ফোন করেছেন এলাকা থেকে। পরে ফেসবুকে ভিডিও দেখে জানতে পারলাম। এই বক্তব্য শুনে আমিও হতভম্ব।

তিনি বলেন, ফটিকছড়িতে ইয়াবা কারবারি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোয়েব আহমদ খান।

গাউছিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, হযরত আদম (আ.) ও হাওয়া (র.) জান্নাতে একটি ফল খেয়েছেন। তাই দুনিয়ায় আসতে হয়েছে। মাদক খাননি। ইসলামের ইতিহাসে কোথাও এমন ব্যখ্যা নেই। ওই পুলিশ মাদকের এই ব্যখ্যা কোথায় পেয়েছেন? এটি ইসলাম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। একজন পুলিশ সদস্য প্রকাশ্যে এমন বলতে পারেন না। দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার এহেন বক্তৃতা মাদকের পক্ষে সাফাই দেওয়ার শামিল। ইসলামে এমন বক্তৃতার কোন স্থান নেই।

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহি বলেন, মিথ্যা বানোয়াট ও বোগাজ ব্যাখ্যা দিয়ে ইসলামকে বিভান্ত করার চেষ্টা করেছে এই পুলিশ সদস্য। এই বক্তব্য তাকে প্রত্যাহার করতে হবে। ইসলাম মনগড়া নয়, যে কেউ যা-তা বলতে পারবে না ইসলামের ইতিহাস নিয়ে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।

ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের কিপাইত নগর স্কুল মাঠে মাদক, সন্ত্রাস ও পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালামত উল্লাহ শাহিন, নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র এ কে জাহেদ চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুল আজম, মাহমুদুল হক, হারুন রশিদ ইমন বক্তব্য রেখেছিলেন।

সমাবেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি থানার ওসি তদন্ত আরিফুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি গন্ধম বলতে গিয়ে ভুলে মাদক চলে এসেছে। কারণ সৃষ্টির শুরুতে গন্ধমও নিষিদ্ধ ছিল। সেই ফল না খাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছিল আদম-হাওয়াকে। সেটি ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দেওয়া উচিত ছিল। সেটি বলতে গিয়ে বিশদ ব্যাখ্যাটা দিতে পারিনি। তাই বিভ্রান্ত হয়েছে।’

এএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!