দ্রুত দেশে ফিরতে চান সালাহউদ্দিন আহমেদ

দ্রুত দেশে ফিরতে চান সালাহউদ্দিন আহমেদ 1প্রতিদিন ডেস্ক : অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায় থেকে মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

রায়ে ন্যায়বিচার পেয়েছেন জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি মনে করছি যে ন্যায়বিচার পেয়েছি আদালতের কাছ থেকে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার চিকিৎসা থেকে শুরু করে সব বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন।’

শুক্রবার মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এ রায় দেন।

তবে কতদিনের মধ্যে এই রায় কার্যকর করতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি আদালত।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এখন যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ হলেই আমার পক্ষে ভাল। আমি দ্রুত দেশের মানুষের কাছে ফিরতে চাই।’

বাংলাদেশে অপহৃত হওয়ার বেশ ক’মাস পর হঠাৎ করেই ২০১৫ সালের ১১ মে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের গল্ফ লিঙ্ক এলাকায় ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেখতে পাওয়া যায়।

শিলংয়ের যে এলাকায় তাকে প্রথম দেখা গিয়েছিল, সেখানে প্রাত:ভ্রমণকারী ক’জনকে জিজ্ঞাসা করে তিনি জানতে পারেন যে তিনি শিলংয়ে। পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন ওই প্রাত:ভ্রমণকারীরাই।

কিন্তু যখন তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন যে তিনি বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী, এবং তাকে কয়েকজন চোখ বাঁধা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে গেছে।

পুলিশ অফিসারেরা এই কথা শুনে ভেবেছিলেন তিনি মানসিক রোগী। তাই প্রথমে তাকে একটা সরকারি মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গ্রেফতারও করা হয় সেদিনই- ভারতে প্রবেশের বৈধ কাগজপত্র না থাকায়।

তারপর বেশ কিছুদিন তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন শিলংয়ের সরকারি হাসপাতাল। কয়েকমাস পরে তিনি জামিন পান, কিন্তু তাকে শিলং ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছিল।

জামিন পাওয়ার পর থেকেই শিলংয়েই থাকছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে চিকিৎসার প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে দিল্লিতেও গিয়েছেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, দেশে ফিরে কী আবার রাজনীতিতেই যোগ দেবেন?

‘আমরা রাজনীতির মানুষ, তাই রাজনীতিতেই সব সময়েই আছি- সে আমি পৃথিবীর যে দেশেই থাকি না কেন। বর্তমানে দেশে যে গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন চলছে, তার সাথেই সবসময়ে আছি,’ বলছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারও পরিকল্পনা রয়েছে তার, কিন্তু সেটা নির্ভর করবে কত দ্রুত তাকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তার ওপরে।

পুলিশ বলছে, নিয়ম অনুযায়ী কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরে তারা সব থেকে কাছের বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করবে সালাহউদ্দিন আহমেদের ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য।

তারপরে পুলিশ ডাউকি সীমান্তে নিয়ে গিয়ে হস্তান্তর করবে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কাছে। তারা সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে দেবে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসের হাতে।

তবে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক আর. পি. আগরওয়াল জানিয়েছেন, তারা এখনও আদালতের নির্দেশ হাতে পাননি। সেটা দেখার পরেই তারা বুঝতে পারবেন যে আদালত ঠিক কী নির্দেশ দিয়েছে সালাহউদ্দিন আহমেদের ব্যাপারে।

যদিও আজ ভারতে অনুপ্রবেশের দায় থেকে মুক্ত হলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ, তবে এটা এখনও অস্পষ্টই থেকে গেল যে বাংলাদেশে অপহৃত হওয়ার পরে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর নজর এড়িয়ে কারা তাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মেঘালয়ের রাজধানীতে নিয়ে এসে ফেলে রেখে গিয়েছিল।

খবর: বিবিসি বাংলা

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!