জাপা নেতাকে ফাঁসাতে আদালতের ‘ভুয়া ওয়ারেন্ট’ বানালেন সোলায়মান শেঠ

পদ হারানোর ‘শোধ’ তুলতে চেয়েছিলেন

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ চট্টগ্রামে নিজ দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদককেই ফাঁসিয়ে দিয়েছেন ধর্ষণের মামলায়। ঢাকার একটি আদালতের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বানানো হয় ‘ভুয়া ওয়ারেন্ট’। পরে এটি কৌশলে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায়।

এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ২০১৫ সালের আগে নগর সভাপতির পদ হারানোর ‘শোধ’ তুলতে তিনি এই জালিয়াতির মামলার আশ্রয় নিয়েছেন।

শনিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির একাংশের নেতৃবৃন্দ।

জানা গেছে, প্রায় ১৫ দিন আগে চট্টগ্রাম নগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা তপন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ‘ভুয়া ওয়ারেন্ট’ চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় পাঠান চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জাতীয় যুব সংহতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ছিদ্দিকী এ অভিযোগ তুলে লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক বৈরী পরিস্থিতিতে দিশেহারা, আক্রোশ ও এককভাবে ক্ষমতা ঠিকিয়ে রাখতে সোলায়মান আলম শেঠ নগর জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে লাগাতার অপপ্রচার ও প্রশাসনে মিথ্যা অভিযোগ করে আসছেন।’

লিখিত ওই বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, গত ৫ নভেম্বর রহস্যজনকভাবে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত থেকে নারী ধর্ষণ মামলার ঘটনায় ‘ভুয়া ওয়ারেন্ট’ বানিয়ে তাও আবার সিএমপির কোতোয়ালী থানায় প্রেরণ করেন। এই সংবাদ স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশের ব্যবস্থা করেন সোলায়মান আলম শেঠ।

অভিযোগে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা তপন চক্রবর্তী ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ হাজির হয়ে মামলার বিষয়ে যাচাইবাচাই করে দেখেন ওই মামলায় তার নামই নেই। এটি মূলত একটি যৌতুকের মামলা, যে মামলায় আদালত কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেননি। মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ওই মামলায় তপন চক্রবর্তী নামের কারও সংশ্লিষ্টতা নেই।

‘ভূয়া ওয়ারেন্ট’ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে আমাদের কাছে এমন (ওয়ারেন্ট) একটা কাগজ আসছিল। প্রথমে ওই কপির সিল ও স্বাক্ষর সন্দেহে হলে তা ভেরিফাই করার জন্য পাঠিয়েছি। তার মধ্যে তপন চক্রবর্তীর মামলায় সংশ্লিষ্টতা নেই বলে তিনি আদালত থেকে একটি লিখিত নথি নিয়ে আসলে পরিস্কার হয়ে যায় ওয়ারেন্টটি ছিল জাল।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, ‘ আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এটি সম্পূর্ণ সাজানো এবং মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।’

মুআ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!