চট্টগ্রাম সিটির ‘ভোট করতে’ দিনভর নগরে ঢুকল বহিরাগতরা, নিশ্চুপ প্রশাসন

দুপুরে সাগরপাড়ি দিয়ে এল সন্দ্বীপের বহর, বিকেলে ফটিকছড়ির জোট

ইঞ্জিনচালিত কাঠের বোটে করে ৩০ জনের বহর নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ‘দায়িত্ব’ পালন করতে চট্টগ্রামে এসেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান সুমন। ‘বহিরাগত’ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও সাগর পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামে আসার সেই ‘বীরত্বের’ ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে জানান দিচ্ছেন সুমনের সঙ্গী-সাথীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে সুমনের সঙ্গে আসা নেতাকর্মীরা দায়িত্ব পালন করবেন ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীর হয়ে।

একই কায়দায় মঙ্গলবার বিকেলে রিজার্ভ বাস ভাড়া করে ফটিকছড়ি থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে এসেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই যাত্রার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন লিখেছেন, ‘চসিক নির্বাচনের উদ্দেশ্যে অন দ্য ওয়ে।’

চট্টগ্রামে ভোটের দায়িত্ব পালন করতে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে তালিকা।
চট্টগ্রামে ভোটের দায়িত্ব পালন করতে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে তালিকা।

এদিকে ফটিকছড়ির নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম সিটির ভোটে কিভাবে ও কোথায় দায়িত্ব পালন করবেন, সেটিও রীতিমতো উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে তালিকা করে ফেসবুকে প্রচার করেছে তারা।

শুধু সুমন কিংবা জয়নাল আবেদিন নন এভাবে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে দল বেধে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ‘ভোট করতে’ নগরের আশপাশের উপজেলাগুলো থেকে ছুটে আসছেন হাজার হাজার মানুষ। নির্বাচন কমিশনের ভাষায় যারা ‘বহিরাগত’। যে বহিরাগতদের ঠেকানোকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাচ্ছে নগরের পুলিশ বাহিনী।

পুলিশের দাবি, এখনও বহিরাগতদের তাড়াতে তৎপর রয়েছে তারা। বহিরাগত ঠেকাতে নগরীর প্রবেশমুখগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

তাহলে এভাবে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে সরকার দলীয় বহিরাগত নেতাকর্মীরা কিভাবে শহরে ঢুকছেন এবং বহিরাগত ঠেকাতে পুলিশি তৎপরতা শুধুই বিএনপির বিরুদ্ধে কিনা— মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দামপাড়া পুলিশ লাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে নগর পুলিশের শীর্ষ কর্তা সালেহ মোহাম্মদ তানভীরকে।

জবাবে সিএমপির এই কমিশনার বলেছেন, ‘কে আওয়ামী লীগ কে বিএনপি সেটি পুলিশের দেখার বিষয় না। বহিরাগতদের বড় রকমের সমস্যা হিসেবেই দেখছেন তারা।’

এক্ষেত্রে নাগরিকদের ভোটার কার্ড নিয়ে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে কোনো বহিরাগত পেলেই গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সিএমপি কমিশনারের এই নির্দেশ কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সেটি দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক ঘন্টা।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!