চট্টগ্রামে স্কুলের পৌনে ৩ কোটি টাকা মেরে জেলে গেলেন প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতি

চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার ৯১৩ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কারাগারে যেতে হল বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক পারভেজ এবং প্রধান শিক্ষক (সাময়িক বরখাস্ত) শফিকুর রহমান সিকদারকে।

মাহমুদুল হক পারভেজ পাথরঘাটা এলাকার নজু মিয়া লেনের মরহুম হারুন অর রশীদের ছেলে এবং শফিকুর রহমান চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড় এলাকার সাইদুর রহমান সিকদারের ছেলে।

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকেরা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দিলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ২০২০ সালের ১৬ মার্চ তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণ হয়।

এরপর একই বছরের ২১ জুন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। ৮ নভেম্বর বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এডহক কমিটি ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুর রহমান সিকদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

২০২১ সালের ১০ মার্চ বিভাগীয় মামলায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও মো. শফিকুর রহমান সিকদার এবং মো. মাহমুদুল হক পারভেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের তহবিল হতে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার ৯১৩ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

এ মামলায় মো. মাহমুদুল হক পারভেজ (৫৩) ও মো. শফিকুর রহমান সিকদার (৫৮) আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠান।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে মো. শফিকুর রহমান সিকদার ও মো. মাহমুদুল হক পারভেজ হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন। তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৫ মার্চ মাহমুদুল হক পারভেজ ও শফিকুর রহমান সিকদারকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি ফজলে আজিজ বাবু।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তপন কুমার দাশ বলেন, শিক্ষক যদি চোর হন, তাহলে সেই জাতির ভবিষ্যৎ কী হতে পারে? এই রকম ঘৃণ্য অপরাধের বিচার শেষ হওয়ার আগে আসামিরা জামিন পেলে দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। সব ভেবেই আমরা জামিনের বিরোধিতা করে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। আদালত সব শুনে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

আইএমই/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!