চট্টগ্রামে নৌকার বাচ্চুকে জেতাতে ভোটারের মন জয়ে মরিয়া নাছির

ভোটের মাঠে লিটন ও আরেক বাচ্চু

রাতেই শেষ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপনির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সময়। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় দিন-রাত চষে বেড়িয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।

রাজনীতির মাঠে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর গ্রুপের অনুসারী উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। তবে এখন উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু দীর্ঘ প্রচার-প্রচারণার চোখে পড়ার মতো মাঠে ছিলেন না চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা।
চট্টগ্রামে নৌকার বাচ্চুকে জেতাতে ভোটারের মন জয়ে মরিয়া নাছির 1
নির্বাচনের প্রচারণার মাঠে দিনরাত বাচ্চুর পাশে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। প্রায় মাসখানেক ধরে চট্টগ্রাম নগরীতে নিজ দলের কর্মসূচি সীমিত পরিসরে করে পুরো সময়কে কাজে লাগিয়েছেন বাচ্চুর সঙ্গে৷ অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে নির্বাচনের কূটকৌশল দিয়ে বাচ্চুকে জেতাতে নিজের অনুসারীদেরও মাঠে নামিয়েছেন গত এক মাস ধরে।

সকাল থেকে শুরু করে রাতেও প্রচারণা চালাচ্ছেন নাছির। তবে নৌকার প্রার্থী বাচ্চু নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত হলেও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সামনের সারির অনেক নেতা সার্বক্ষণিক বাচ্চুর সঙ্গে প্রচারণায় ছিলেন না। এমনকি খোদ নওফেল বলয়ের অনেক সিনিয়র নেতাদেরও দেখা যায়নি প্রচারণায়।

এর মধ্যে অনেকে আবার ফটোসেশন করে দায়ও সেরেছেন। ২০-৩০ মিনিটের জন্য প্রচারণায় অংশ নিয়ে ছবি তুলে দিয়েছেন ফেসবুকে। আবার অনেকে একধাপ এগিয়ে এসব ছবি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতার হোয়াটসঅ্যাপে।

চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ৯০ শতাংশ প্রচারণায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে সামনের সারিতে দেখা গেছে জ ম নাছিরকে। প্রচারণায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী। বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রার্থীকে জেতানোর কোনোই বিকল্প নেই। এই ইস্যুতে আওয়ামী লীগে কোনো ভেদাভেদের কারণ নেই। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে নৌকা প্রতীকে জেতাতে আমরা বাচ্চুর সঙ্গে ঘরে ঘরে যাচ্ছি। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। আশাকরি, এই নির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে এবং নৌকা প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু ভোটে বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন।’
চট্টগ্রামে নৌকার বাচ্চুকে জেতাতে ভোটারের মন জয়ে মরিয়া নাছির 2
তবে মহিউদ্দিন বাচ্চুর একাধিক জনসংযোগে নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতিখার সাইমুল চৌধুরীকেও দেখা গেছে। এদিকে, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর আব্দুস সবুর লিটন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য আরশাদুল আলম বাচ্চুকে আলাদা একাধিক প্রচারণায় দেখা গেছে বলে জানান চট্টগ্রাম-১০ আসনের ভোটাররা। এসব প্রচারণায় তাদের অনুসারীদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো।

এর মধ্যে নির্বাচনী এলাকার মধ্যে প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটনের ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডের ভোটার রয়েছে। এই ওয়ার্ডের বাচ্চুর সঙ্গে তিনিও ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রচারণায়। এছাড়া আরশাদুল আলম বাচ্চু ১৪ নম্বর লালখানবাজার ওয়ার্ড, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে এলাকায় মহিউদ্দিন বাচ্চুর সমর্থনে গণসংযোগ করেন।
চট্টগ্রামে নৌকার বাচ্চুকে জেতাতে ভোটারের মন জয়ে মরিয়া নাছির 3
প্রচারণার বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় আমরা ৬০ শতাংশ ভোটারের কাছে নৌকা প্রতীকের ভোটের বার্তা পৌঁছাতে পেরেছি। কারণ চট্টগ্রাম-১০ আসন শহরের মধ্যে থাকায় অনেক ভোটার বাসাও পরিবর্তন করেছে, অনেক কর্মস্থলে ব্যস্ত থাকেন। তাই সব ভোটারের কাছে আমরা পৌঁছতে পারিনি। এই হিসেবে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে বলে আমার ধারণা।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় সার্বক্ষণিক ছিলেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। প্রচারণায় নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলতাফ হোসেন বাচ্চুও ছিলেন। অফিসিয়ালভাবে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রয়েছেন। আমরা আমাদের প্রচারণা চালিয়েছি, তবে ভোটারদের অংশগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্রের পাশে থাকা নির্বাচনী ক্যাম্পের কর্মীদের আন্তরিকতা ও চেষ্টাকে প্রাধান্য পাবে।’

নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের ফটোসেশন করে ফেসবুক প্রচারণার বিষয়ে নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এখন তো ডিজিটাল সময়। অনেকে হয়তো প্রচারণায় এসে ফটোসেশন করে চলে যাচ্ছেন এবং ফেসবুকে প্রচার করছেন। দীর্ঘ সময় প্রচারণায় থাকছেন না। এরপরও এরা তো অংশগ্রহণ করেছেন। হয়তো বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ সময় দিতে পারেননি।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!