চট্টগ্রামে দিনে শনাক্ত হয় ২০০ করোনা রোগী, হাসপাতালে ঠাঁই মেলে ১০ জনের

সময়ক্ষেপণের কৌশলে ইমপেরিয়াল ও ইউএসটিসি

চট্টগ্রামে হু হু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও বিপরীতে করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়েনি সেভাবে। সবমিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত সাড়ে ৩ হাজার রোগীর বিপরীতে হাসপাতালে শয্যা আছে ৩৯০টি। ফলে বেশিরভাগ রোগীকেই হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক রোগী শনাক্ত হচ্ছে চট্টগ্রামে, এর মধ্য থেকে মাত্র ৮-১০ জন রোগীকে হাসপাতালে ঠাঁই করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর নানামুখী চেষ্টা তদবিরের পরও ‘হচ্ছে-হবে’— এই কথামালার বৃত্তেই আটকে আছে সব প্রচেষ্টা। সরকারের নির্দেশনার দেওয়ার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও করোনা রোগীদের চিকিৎসা শুরুর বিষয়ে কোন সুখবর আসেনি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও ইউএসটিসির বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে।

এই অবস্থায় নতুন করে রেলওয়ে হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল ও হলি ক্রিসেন্টে ১৭০টি শয্যা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে রোগী বাড়ছে প্রচুর। সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে। আমাদের হাসপাতালের শয্যাও বেড়েছে। তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দিনে ২০০ রোগী শনাক্ত হলে ৮ থেকে ১০ জন হাসপাতালে আসছে। বাকিরা বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলায় জোর দিচ্ছি। চসিকের উদ্যোগে আগ্রাবাদে একটা কমিউনিটি সেন্টারে ২৫০ বেডের আইসোলেশন হচ্ছে। হালিশহরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১০০ বেডের হবে। আরও বেশ কিছু আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলার বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আইসোলেশন সেন্টারগুলো হয়ে গেলে আমাদের চাপ আরও খানিকটা কমবে।’

এই আশ্বাসও সেই ‘হচ্ছে-হবে’— এই কথামালার বৃত্তে আটকে পড়ছে কিনা সেটি বোঝা যাবে সামনের দিনগুলোতে।

এই পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনার পর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও কোভিড ১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু করতে পারেনি দুই বেসরকারি হাসপাতাল। আগামী এক সপ্তাহেও এই দুটি হাসপাতাল চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টদের কথায়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২৬ মে দুটি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে অবিলম্বে চিকিৎসা চালুর নির্দেশ দেয়। কিন্তু গত এক সপ্তাহেও হাসপাতাল দুটি চালু হয়নি। হাসপাতাল দুটি হচ্ছে— বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল। হাসপাতাল দুটি ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, যা সময়ক্ষেপণের কৌশল বলে বিভিন্ন মহলের সন্দেহ।

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অবকাঠামোগত কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ৩৬ জনের মতো ডাক্তার ও সমপরিমাণ নার্স লাগবে। সেগুলো নিশ্চয় সরকারিভাবে দেওয়া হবে। কারণ কোভিড হাসপাতাল চালু করলে তো সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে তিন বছরের জন্য করতে হবে। এত দীর্ঘ সময় তো আমরা পকেটের টাকা দিয়ে হাসপাতাল চালাতে পারবো না। এসব বিষয় সুরাহা হতে হবে। আর আমাদের হাসপাতাল চালু করা হচ্ছে কেবল পুলিশ সদস্যদের জন্য। আগে এমওইউ (চুক্তিপত্র) সাইন হতে হবে। তারপর চালু করা যাবে।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!