চট্টগ্রামে ডাক্তারের যৌতুক মামলায় স্ত্রীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে হুলিয়া

চট্টগ্রামে যৌতুক দাবি করার অভিযোগ এনে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালকের নামে মামলা করেন এক ডাক্তার। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। সেই তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওই চারজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার(৩১ আগস্ট) তদন্ত প্রতিবেদনে মামলার সত্যতা পাওয়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চারজনের বিরুদ্ধে এই সমন জারি করেন।

চার আসামি হলেন ডাক্তারের স্ত্রী ফারহানা আক্তার পিংকি, শাশুড়ি হোসনে আরা বেগম, শ্বশুর মো. আব্দুল মতিন ও শ্যালক মো. জাহিদ হাসান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামালার বাদি ডা. জয়নাল আবেদিন। তিনি নগরীর সিএসসিআর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক।

তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর সামাজিকভাবে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন জয়নাল ও ফারহানা। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ফারহানা তার স্বামী জয়নালের কাছে হানিমুনের জন্য বিদেশ ভ্রমণ, আইফোন ও স্বর্ণ অলংকার দাবি করেন।

জয়নাল স্ত্রীর সকল আবদার পূরণ করার পর আবারও নতুন নতুন জিনিসের বায়না করেন তিনি। এমনকি ছোট ভাইয়ের জন্য আইফোন-১৩ মডেলের মোবাইল ফোন কিনে দিতেও চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু সেসময় স্ত্রী ফারহানা অন্তঃসত্ত্বা থাকায় এবং কিছুদিন পর প্রসবকালীন খরচের কথা চিন্তা করে কিনে দিতে পারবেন না বলে জানালে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ফারহানার মা, বাবা ও ভাইয়ের প্রত্যক্ষ প্ররোচণায় নতুন ফ্ল্যাট কেনা, নতুন ফোন ও নানান বিষয়ে একাধিকবার বিশাল অংকের টাকা দাবি করে সংসারে অশান্তি করেন ফারহানা। সর্বশেষ ছোটভাইয়ের জন্য আইফোন, স্বর্ণের অলংকারসহ নিজের শখ পূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন ফারহানা। ফারহানার এমন আবদারের সঙ্গে সম্মতি জানিয়ে ফারহানার মা বাবাও বলেন, ‘পাঁচ লাখ টাকা না দিলে ও বাড়িতে যাবে না’।

ঘটনা চলাকালীন ফারহানা অন্তঃসত্তা ছিলেন, তাই বাচ্চার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে একাধিকবার বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করলেও শ্বশুর বাড়ির লোকদের প্ররোচণায় বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। টাকা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান হওয়ার নয় বলেও জানানো হয় স্ত্রী ফারহানার পরিবারের পক্ষ থেকে।

উপায় না দেখে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন ডাক্তার জয়নাল। আদালত তখন মামলাটি আমলে নিয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি তদন্ত) তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ চারমাস তদন্তের পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালত অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!