চট্টগ্রামে করোনার চিকিৎসা মিলবে মেরিন সিটি মেডিকেল ও সাউদার্নে

প্রশাসনের সার্ভিল্যান্স টিম আবার তৎপর

করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় চট্টগ্রামের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচেপড়া ভীড় সামলাতে আবারও মাঠে নেমেছে সার্ভিল্যান্স টিম। এই দফায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসাশয্যা বাড়ানোসহ যেসব হাসপাতালে করোনা রোগী কম ভর্তি হচ্ছে, সেসব হাসপাতালে রোগী ভর্তি বাড়াতে করণীয় ঠিক করতে নির্দেশনা দেবে এই টিম।

প্রথম দিনে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদের মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে সার্ভিল্যান্স টিম।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে হাসপাতাল দুটি পরিদর্শনে যান সার্ভিল্যান্স টিমের আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিুনুর রহমান এবং জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।

এই দুটি হাসপাতালের মধ্যে মেরিন সিটি গত বছর থেকে ৪০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড পরিচালনা করছে। সে সময়ে হাসপাতালটিতে করোনা চিকিৎসা শুরু করতে শিল্পগ্রুপ এস আলমের সহযোগিতায় বেশ ঘটা করে প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। তবে এই মুহূর্তে যেখানে চট্টগ্রামের প্রায় সব হাসপাতালই রোগীতে ভর্তি, সেখানে এই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা খুবই কম। মূলত এর কারণ জানতে ও রোগী ভর্তি বাড়ানোর নির্দেশনা দিতেই হাসপাতালটি পরিদর্শন করে সার্ভিল্যান্স টিম।

সার্ভিল্যান্স টিমের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মেরিন সিটি গত বছর থেকে করোনা চিকিৎসায় আলাদা ওয়ার্ড পরিচালনা করছে। কিন্তু সেখানে রোগী ভর্তির সংখ্যা কম। কেন কম— এই বিষয়ে জানতে ও এই হাসপাতালে চিকিৎসার পরিসর আরও বাড়ানোর বিষয়ে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।’

এই বিষয়ে মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক এম এ কাদের বলেন, ‘আমরা তো গত বছর থেকে ওয়ার্ড চালাচ্ছি। মাঝখানে করোনা পরিস্থিতি ভাল হওয়ায় রোগী কমে আসে। আজকে আমাদের হাসপাতালে ১৪ জন রোগী আছে। আমাদের এখন আটটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা আছে, ছয়টি আইসিইউ আছে। আমাদের আরও সিট বাড়াতে বলা হয়েছে।’

করোনা ওয়ার্ডের শয্যা বাড়ানোর বিষয়ে সার্ভিল্যান্স টিমের নির্দেশনার বিষয়ে আপত্তি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের আটটটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার দুটিই নষ্ট। অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ নিয়ে আমরা ভয়ে আছি। এছাড়া লোকবলও লাগবে, ভেন্টিলেটর লাগবে। এসব বিষয়ে আমরা একটা চাহিদাপত্র দেবো। এগুলো পাওয়া গেলে শয্যা বাড়াতে পারবো আমরা।’

এদিকে একই টিম পাশের সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও যায়। এই হাসপাতালে এখন পর্যন্ত করোনা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে করোনা চিকিৎসা শুরু করার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে এই হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা শুরু করার কথা জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, গত বছর করোনার শুরুর দিকে চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে চরম নৈরাজ্য শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০২০ সালের ৩১ মে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালে কভিড-১৯ ও নন কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ও তদারকি করার জন্য সাত সদস্যের একটি সার্ভিলেন্স কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস। কমিটিতে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে (উন্নয়ন) আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করা হয়।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!