চট্টগ্রামে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংকে ফেল করেছে ১৯ হাজার ৯৫৭ জন পরীক্ষার্থী। এর প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলাফলে। এজন্যই চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া বিষয়ভিত্তিক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বোর্ডের তথ্যনুযায়ী, মোট ১২টি বিষয়ে (তিন বিভাগ) এবার পাস করেছেন মোট ১ লাখ ২০ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে শতাংশ হারে অংকে কৃতকার্য হয়েছেন ৮৭ দশমিক ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী। যা অন্যান্য ১১ বিষয়ের চেয়ে সবচেয়ে কম। তবে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে ভাল করেছে পরীক্ষার্থীরা।
আসমা খাতুন নামে একজন পরীক্ষার্থী জানান, পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন হয়েছে। প্রশ্নের কাঠামো ঘোরানো ছিল। কমন পড়েনি। এমসিকিউ আরও বেশি কঠিন হয়েছে। ৩০ নম্বরের এমসিকিউ খসড়া করে চূড়ান্ত উত্তর বের করার সময় পাইনি। প্রথম দিকের উত্তর বের করতে করতেই সময় চলে গেছে। সৃজনশীলেও তাই হয়েছে।
জানা গেছে, অংক পরীক্ষাটি ৩ ঘন্টা যাবত শর্ট সিলেবাস অনুযায়ী ১০০ নম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পরীক্ষায় ২টি বিভক্ত করে প্রশ্নপত্র প্রদান করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৭০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্ন ছিল এবং ৩০ নম্বরের এমসিকিউ আকারে প্রশ্ন ছিল।
তবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ এর জন্য দায়ী করলেন কোচিং নির্ভরতাকে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা কোচিং মুখী হওয়ায় তারা মুল পাঠ্য বই অনুশীলন করতে চায় না। কোচিং সেন্টারের লেকচারশীট পড়ে অন্য কোনো বিষয় হলেও গনিতে পাস করা কঠিন হয়ে পড়ে। একজন শিক্ষার্থী যখন মূল পাঠ্য বই দেখে অংক অনুশীলন করবে, প্রশ্ন খন্ডন করবে, তখন সেই শিক্ষার্থীর এমসিকিউ ও সৃজনশীল কোনো অংকই সমাধান না করে আসার সুযোগ নেই। এবারের অংকে খারাপ কারণ হলো শিক্ষার্থীদের কোচিং নির্ভরতা।
তবে এই শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ভাল নম্বর তুলেছে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ে।
বোর্ডের তথ্যনুযায়ী, মোট ১২টি বিষয়ে (তিন বিভাগ) এবার পাস করেছেন মোট ১ লাখ ২০ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে শতাংশ হারে অংকে কৃতকার্য হয়েছেন ৮৭ দশমিক ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী। যা অন্যান্য ১১ বিষয়ের বেশি ফারাক।
তবে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে ভাল করেছে পরীক্ষার্থীরা। শতকরা হিসেবে যা ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্য দশ বিষয়ে পাসের হার যথাক্রমে- বাংলায় ৯৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ইংরেজীতে ৯০ দশমিক ৪১ শতাংশ, উচ্চতর গণিতে ৯৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, বিজ্ঞানে ৯৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ, পদার্থ বিজ্ঞানে ৯৯ দশমিক ০৭ শতাংশ, রসায়নে ৯৭ দশমিক ৪২, জীববিজ্ঞানে ৯৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ব্যবসায় উদ্যোগে ৯৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ, হিসাববিজ্ঞানে ৯৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিংয়ে ৯৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার ২১৬টি কেন্দ্রে ১ হাজার ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮১৯ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়। যা গতবারের চেয়ে ৪ হাজার ৭০৭ জন বেশি। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী। সব মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় পাসের হার এবং জিপিএ ৫ দুটোই কম। গত বছর পাসের হার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ থাকলেও এ বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮ দশমিক ২৯ শতাংশে। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী।
এমএফও