চট্টগ্রামের মহসিন কলেজের মসজিদে মিললো শিবিরের বিপুল জিহাদী বই

চট্টগ্রামে সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের মসজিদ থেকে ছাত্র শিবিরের সাংগঠনিক প্রকাশনীর প্রায় অর্ধশতাধিক জিহাদী বই জব্দ করেছে কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে কলেজের মসজিদের ভেতরের একটি আলমিরা থেকে এসব বই উদ্ধার করা হয়। এ সময় কলেজ অধ্যক্ষও সেখানে উপস্থিত ছিল। পরে এসব বই কলেজ প্রশাসনের জিম্মায় হস্তান্তর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম ইউ সোহেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কলেজের মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েলাম। নামাজ শেষে মসজিদের ভেতর থাকা আলমিরা কৌতুহলবশত খুলে সেখানে কি বই আছে দেখছিলাম। তখনই নজরে এল ছাত্র শিবিরের কর্মপদ্ধতিসহ আবুল আলা মউদুদী ও গোলাম আজমের লেখা প্রায় অর্ধশতাধিক বই।’

দীর্ঘ ৭ বছর ধরে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ। এমন পরিস্থিতিতেও এই ধরনের ঘটনা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাদের চরম ব্যর্থতা হিসেবে দাবি করে ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর এই ক্যাম্পাস শিবিরের দখলে ছিল। তাদের আধিপত্য ও নির্মমতার গল্প সবারই জানা। কত কঠিন এক লড়াইয়ের পর এই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রন এসেছে সেটাও সকলে জানে। ছাত্রলীগ ৭ বছর ধরে আছে। এরপরও এমন ঘটনা লজ্জাজনক। মসজিদের দায়িত্বে যারা আছে এবং কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে যারা আছে তাদেরকে এই দায় নিতে হবে।’

এই ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির নেতাদের দায় কোথায় এমন প্রশ্নের জবাবে কলেজ ছাত্রলীগের আরেক নেতা আনোয়ার পলাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই ক্যাম্পাসে অনেক রক্ত ঘামের বিনিময়ে ছাত্রলীগের পতাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে নগর ছাত্রলীগ নেতারা নিজেদের পকেট কমিটি দিয়ে দিল। যেহেতু একটা কমিটি তারা দিয়েছেন আমরা কমিটির নেতাদের কাজে বাগড়া দিতে চাইনি। কিন্তু যখন দেখলাম এই কমিটির নেতাদের আদর্শিক বিষয়গুলোতে নজরই নাই তখন আমাদেরই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। যেহেতু কমিটি নিয়ে বিতর্ক ছিল সেহেতু তাদের দায় ছিল নিজেদের প্রমাণ করার। কিন্তু তারা কখনো সে দায় অনুভব করেনি। কারণ তারা জানে শুধু নগর ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে মেনটেইন করতে পারলেই ছাত্রলীগ করা যায় দাপটের সাথে।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদটা পাহাড়ের অনেক উপরে আর হোস্টেলের পাশে। ২০১৫ সাল থেকে হোস্টেল বন্ধ হওয়ায় মসজিদে তেমন কেউ নামাজ পড়েনা। আমি কিছুদিন আগে যোগ দিয়েছি। এরপর থেকে সেখানে জুমার নামাজের ব্যবস্থা করেছি। নিয়মিত নামাজে সেভাবে মুসল্লি না থাকায় বিষয়টি এতোদিন কারও নজরে আসেনি। এগুলো আগের বই। সরানো হয়নি। আমরা বিষয়টি দেখছি।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!