চট্টগ্রামের করোনা চিকিৎসায় মা ও শিশু হাসপাতালের ৬০ শয্যার যাত্রা শুরু

করোনার চিকিৎসা সেবায় পিছিয়ে থাকা চট্টগ্রামের জন্য কিছুটা হলেও সুখবর নিয়ে এলো চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। নবনির্মিত ভবনে ১০টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ ৬০ বেড নিয়ে করোনা রোগীদের জন্য চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে হাসপাতালটি।

শনিবার (৬ জুন) বেলা ১২ টায় টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে এই করোনা ইউনিট উদ্বোধন করা হবে।

করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায় যখন চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দুয়ার একপ্রকার বন্ধ, ঠিক তখনই মানবিকতার হাত বাড়িয়ে নিজেরাই এগিয়ে এলো চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতাল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এই হাসপাতালে ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত কিংবা করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে ১০টি। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আইসোলেশনের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে ২০টি শয্যা। পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে ৩০ শয্যার ফ্লু কর্নার। একই সাথে করোনা রোগী পরিবহণের জন্য যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক দুইটি অ্যাম্বুলেন্স। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শয্যার সংখ্যা ১০০ করা হবে।

এ বিষয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, করোনা চিকিৎসার জন্য দেড় মাস ধরে হাসপাতালটিকে প্রস্তুত করেছি। আজ (শনিবার) থেকে আমরা পুরোদমে করোনা চিকিৎসা শুরু করতে যাচ্ছি। আমাদের এখান থেকে আগেও কোন রোগী ফেরত যেতো না। করোনা পজিটিভ হলেও আমরা সেবা দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আপাতত ১০টি আইসিউসহ ৬০ শয্যা দিয়ে করোনা ইউনিট আমরা শুরু করছি। এটি ১০০ শয্যাতে উন্নীত করার কাজ চলছে।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদ সদস্য ও করোনা ওয়ার্ড বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন, দুই মাস আগে হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আমরা করোনার ভয়াবহতা ও চট্টগ্রামে করোনা মোকাবেলার প্রস্তুতির কথা চিন্তা করে করোনা ওয়ার্ড স্থাপনের বিষয়টি অনুমোদন করিয়ে নিই। যার ফলশ্রুতিতে আজ এই ওয়ার্ড চালু হচ্ছে। দুর্দিনে আমরা জনগণের জন্য কিছু করতে পারছি এটিই আমাদের আত্মতৃপ্তি।

চট্টগ্রাম নগরীতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো করোনা রোগী দূরের কথা, যখন করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদেরও চিকিৎসা দিচ্ছে না তখনই নিজ তাগিদে এই হাসপাতাল এগিয়ে আসায় সাধুবাদ জানিয়েছে বিশিষ্টজনেরা।

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমি নিজেও মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য। আমি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তাদের মূল লক্ষ্যটাই হলো সেবা। যেকোনো রোগী যখনই হাসপাতালে আসুক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রিফিউজ করতে পারে না। এটা হাসপাতালের মূলনীতির বাইরে। এটা নৈতিকতা অথবা আইনগত বলেন, আর মানবিক কিংবা মনস্তাত্ত্বিক দিক বলেন সব দিক থেকেই অবৈধ। যতক্ষণ সিট থাকবে রোগীকে তারা ততক্ষণ সেবা দেবে।

চট্টগ্রামের অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতাল যেভাবে রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে না, সেখানে মা ও শিশু হাসপাতাল নিজ উদ্যোগে করোনা ইউনিট চালু করতে যাচ্ছে। এটা একটা মাইলফলক বলেও মন্তব্য করেন ড. মো সেলিম উদ্দিন।

এমআইটি/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!