‘গণপরিবহন নৈরাজ্য’—চট্টগ্রামে আদায় হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া, ভোগান্তিও চরমে

শতকরা ৬০ ভাগ বর্ধিত ভাড়ার প্রথম দিনেই চট্টগ্রাম নগরীতে লেগে গেছে হট্টগোল। যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ বর্ধিত ভাড়া। সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন রুটের বাস, টেম্পুতে বর্ধিত ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে বাসের হেলপার ও চালকদের বাকবিতন্ডবতা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে, গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সরকারি নির্দেশনা চট্টগ্রাম নগরে মানছে না অধিকাংশ গাড়ি চালক। নগরের বহদ্দারহাট মোড়, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, মুরাদপুর ও দুই নম্বর গেট এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। অনেক গাড়িতে আগের মতোই যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। আবার বর্ধিত ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে।

বর্ধিত ভাড়ার প্রথম দিনে নগরীতে গণপরিবহনও চলছে কম। সকালে কর্মস্থলে যেতে নগরবাসীকে পোহাতে হয়েছে দূর্ভোগ। পড়তে হয়েছে নানা ভোগান্তিতে। ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় দাঁড়িয়ে গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই কর্মস্থলে রওনা দিয়েছেন অনেকেই।

বুধবার (৩১ মার্চ) ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হবে বলে জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সেতুমন্ত্রী এ সময় বলেছিলেন, ‘বাসগুলোতে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে এই বর্ধিত ভাড়া কার্যকর থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার আগের মতো ভাড়া নিতে হবে।’

কিন্তু বর্ধিত ভাড়া নিয়ে নগরীতে প্রথম দিনেই গণপরিবহনে বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা যায়। যাত্রীদের তোপের মুখে পড়েন বাসচালক ও হেলপাররা। ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে যাত্রীরা চালক ও হেলপারদের সাথে জড়িয়ে পড়েছে হাতাহাতিতে।

নগরীর বিভিন্ন রুটের একাধিক বাসে ও টেম্পুতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পরিবহন শ্রমিক নেতা মো: নজরুল ইসলাম।

তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বর্ধিত ভাড়ার প্রথম দিনেই ভাড়া নিয়ে অরাজকতা তৈরি হয়েছে। আজ বিভিন্ন বিভিন্ন রুট থেকে খবর আসছে আমাদের কয়েকজন শ্রমিককে যাত্রীরা মারধরও করেছেন গাড়িতে।’

আবার নগরীতে কয়েকটি রুটের যাত্রীরা জানান, শতকরা ৬০ ভাগ বর্ধিত ভাড়া অনুযায়ী ১০ টাকার ভাড়ার জায়গায় যাত্রীদেরকে বাড়তি দেওয়ার কথা ৬ টাকা। কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে দ্বিগুণ বর্ধিত ভাড়া ২০ টাকা। আর টেম্পুতে নেওয়া হচ্ছে উঠা-নামা ১০ টাকা। ৫ টাকার ভাড়ার জায়গাতেও নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। আসন অর্ধেক ফাঁকা রাখার কথা থাকলেও তা রাখা হয়নি বেশিরভাগ গণপরিবহনেই।

নগরীর দেওয়ানহাটে সকালে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গাড়িগুলোতে গাদাগাদি, ভিড়। কিন্তু সেই ভিড় ঠেলে যেসব যাত্রীদের উঠা-নামা করতে দেখা গেছে। বাড়তি ভাড়া নিয়ে অসেন্তাষ প্রকাশ করছেন তারা।

দেওয়ানহাটের ওয়ার্কশপে কর্মরত মো. রাকিব নামে এক যাত্রী জানান, নগরীর বারিক বিল্ডিং থেকে দেওয়ানহাটে আসতে তাকে গুণতে হয়েছে ১৫ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ৭ টাকা।

এছাড়াও নগরীতে বুধবার যান চলাচলও ছিল কম। সকাল থেকেই কর্মব্যস্ত এলাকার মোড়ে মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। গার্মেন্টস কর্মীদের পড়তে হয়েছে বিপাকে। যেসব গার্মেন্টে কর্মীদের যাতায়াতের জন্য অফিসের গাড়ি নেই, তারা গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করে গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই অফিস পথে রওনা হয়েছেন।

আইএমই/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!