খাবারের চড়া দাম কক্সবাজারের দুই ট্রেনে, দামের সঙ্গে মানের বড় ফারাক

অন্যান্য আন্তঃনগর ট্রেনের মতো ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী দুই জোড়া ট্রেনেও যাত্রীদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে চড়া দামে। খাবারের দামের সঙ্গে মানের বিস্তর ফারাক রয়েছে। বাজারমূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে এসব খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব খাবার ট্রেনে সরবরাহ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব ক্যাটারিং কোম্পানি ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সেল’ (বিআরসিটিসি)। টেন্ডার না দিয়ে আয় বাড়াতে রেলওয়ে নিজস্ব ক্যাটারিং কোম্পানির মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের একাধিক যাত্রীর কাছ থেকে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও খাবারের ছবিসহ পোস্ট করেছে। সরেজমিন গিয়েও এই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

তবে খাবারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে না দাবি করে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আপাতত দুই ট্রেনে রেলের ক্যাটারিং খাবার সরবরাহ করছে। পরে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে তারা। এছাড়া খাবারের দাম ও মান ঠিক আছে।

জানা গেছে, রেলের ক্যাটারিং থেকে ট্রেনে যেসব খাবার বিক্রি করা হয় সেই নাস্তার আইটেমের যে প্যাকেট তাতে রয়েছে এক পিস পাউরুটি, একটি ভেজিটেবল কাটলেট, একটি চিকেন। যার প্রতি বাক্সের মূল্য নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। তবে অনেকের কাছ থেকে ১৮০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে পোলাও খিচুড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।

আরও জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম- কক্সবাজার রুটে গত বছরের ডিসেম্বর চালু হয় প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’। এরপর আরেকটি ট্রেন ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ চালু হয় চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে। দুটো ট্রেনে ঢাকার বিআরসিটিসি থেকে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। রেলের নিজস্ব আয়ের জন্য তারা ট্রেন দুটির খাবার সরবরাহের জন্য এখনও ইজারা দেয়নি। এছাড়া খাবারের গাড়িতে মূল্য তালিকা টাঙানোর নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাত ১১টায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ট্রেনে কর্মচারীরা খাবারের কোচে বসে আছেন। অনেকের পোশাকে নামফলক নেই। তাদের কাছে খাবারের দাম জানতে চাইলে তারা প্রতিটি নাস্তার প্যাকেট ১৭০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান। কিন্তু ট্রেনের নাস্তা কিনে খাওয়া এমন বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তারা কেউ ২০০ টাকা, কেউ ১৯০ টাকা আবার কেউ ১৭০ টাকায় নাস্তা কেনার কথা জানান। অবার কয়েকজন বাসি নাস্তা গরম করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

পর্যটক এক্সপ্রেসের ‘ঢ’ কোচের সাব্বির আহম্মেদ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘খাবারের বক্সে ১টি স্যান্ডউইচ, ১টি কাটলেট, ১ পিস চিকেন দিয়েছে ২০০ টাকার বিনিময়ে।’

পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে খাবার গাড়িতে দায়িত্বরত সজল নামের এক কর্মচারী জানান, এক পিস স্যান্ডউইচ ৬০ টাকা, এক পিস চিকেন ফ্রাই ৮০ টাকা, ভেজিটেবল কাটলেট ৭০ টাকা, জেলি ব্রেড ২ পিস ৪০ টাকা, বার্গার (ছোট) ৮০ টাকা, আধ লিটার পানি ২০ টাকা এবং রং চা ১৫ টাকা করে যাত্রীর কাছে বিক্রি করা হয়।

এ বিষয়ে রেলওয়ের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পূর্ব) জোবেদা আক্তার বলেন, ‘কক্সবাজারগামী ট্রেনে খাবার সরবরাহ করার বিষয়টি ঢাকা থেকে পরিচালনা করা হয়ে থাকে।’

যাত্রীদের কাছ থেকে খাবারের বেশি দাম রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘যাত্রীদের সুবিধায় সাময়িকভাবে এই সার্ভিস (খাবার সরবরাহ) চালু করা হয়েছে। দ্রুত টেন্ডার আহ্বান করে খাবার সরবরাহের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!