কর্ণফুলী নদীর লইট্টাঘাটে চসিকের নাম ভাঙিয়ে চলছে চাঁদাবাজি

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী সংলগ্ন ফিরিঙ্গীবাজারের ইয়াকুবনগর লইট্টাঘাটে চলছে অবৈধ ইজারা আদায়ের মহোৎসব। ঘাটটি সিটি কর্পোরেশন হতে ইজারা না হওয়ার সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রভাবশালীদের এমন কর্মকাণ্ডে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এমনকি অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে যেকোন সময় সংঘর্ষ ও অনাকাংখিত ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় স্থানীয়রা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামশুল তাবরীজ ও ভারপ্রাপ্ত অ্যাস্টেট অফিসার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী।

জানা যায়, অনুমোদন না থাকলেও নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের লইট্টাঘাট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। ভূয়া ইজারার কথা বলে একটি মহল চাঁদা আদায় করছেন। যার পিছনে নেতৃত্ব রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিরা। সরেজমিনে দেখা যায়, গায়ের জোরে কতিপয় যুবক কোন রশিদ ছাড়া যাত্রী সাধারণ ও ঘাটে মালামাল উঠানামায় টাকা তুলছেন।

১৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ইয়াকুবনগর ঘাটের আসিফ ও হুমায়ুন কবির লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগে লইট্টাঘাটে অবৈধ ইজারা আদায়ের সাথে জড়িত মো. খাস্তগীর (৪০), মো. সোহেল (৪৫), এরশাদ প্রকাশ কালু (৪০), মো. জুয়েল (২৮), মো. টিপু (৩০) ও মো. উজ্জ্বল (৩২) এর নাম উল্লেখ করা হয়। অভিযোগের ব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করলেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, ফিরিঙ্গীবাজারের লইট্টাঘাট মূলত মাছের বোর্ড। এখানে মাছের টেম্পু ও মালামাল বহনকৃত গাড়িসহ দৈনিক প্রচুর যানবাহন ঘাট পারাপার হয়। চসিকের তথ্যমতে, লইট্টাঘাটটি ২০২২ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন হতে অর্থ আদায়ের জন্য কোন প্রকার টেন্ডার বা ইজারা দেওয়া হয়নি। এখন যারা ইজারা আদায় করছেন তারা অবৈধ ভাবে সুবিধা নিচ্ছেন। অসাধু লোকজন তাদের দলবল নিয়ে চসিকের নাম ভাঙিয়ে প্রতিটি যানবাহন পারাপার, মালামাল লোড আনলোডিং থেকে অর্থ আদায় করছেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করছেন।

নৌ পুলিশের ওসি এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, কেউ যদি কর্ণফুলী নদীর কোন ঘাটে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে তাহলে সরকার রাজস্ব হারাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন। পাশাপাশি আমরা নৌ পথে যত্রতত্র সাম্পান ও নৌযান চলতে দিতে পারি না। কারণ আইন না মানায় নদীতে দুর্ঘটনা বাড়তেছে।

চসিকের এস্টেট অফিসার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজিং কাজ চলাচলের কারণে কয়েকটি ঘাট এবার ইজারাভূক্ত করা হয়নি। এ সুযোগে হয়তো ফিরিঙ্গীবাজারের লইট্টাঘাটে অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

এ বিষয়ে জানতে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব এর মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নাম ব্যবহার করে কেউ যদি অবৈধ ভাবে টাকা পয়সা আদায় করে, সেটাকে আমরা চাঁদাবাজিই বলবো। সেই ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!