কর্ণফুলী গ্যাসের অবৈধ সংযোগ নিয়ে শরীফের করা মামলার সত্যতা পায়নি দুদক

যথাযথ সাক্ষ্য না পাওয়ায় সানোয়ারা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) চারজন কর্মকর্তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নানা অনিয়মের অভিযোগে সদ্য চাকরিচ্যূত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন ২০২১ সালে ১০ জুন এই মামলা দায়ের করেন।

মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া পাঁচজন হলেন—সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে ও সানোয়ারা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান।

দুদক প্রধান কার্যালয়ের কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হকের সই করা একটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা সাক্ষ্য-স্মারক ও অন্য কাগজপত্র পর্যালোচনায় উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় দুদক আইন–২০০৪–এর ৩২ ধারা এবং দুদক কমিশন বিধিমালা ২০০৭–এর বিধি ১৫ উপবিধি ১–এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হলো। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এই চিঠিটি ইস্যু করা হয়।

চট্টগ্রাম আদালতে দায়িত্বরত দুদকের জিআরও আবদুল লতিফ বলেন, বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রতিবেদনটি আসে। মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদনের চিঠিটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. আতিকুল আলম কোনো মন্তব্য করেননি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের (বর্তমানে মৃত) নামে বরাদ্দ করা ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার গ্যাস–সংযোগ ছিল। এর মধ্যে ১২টি নগরের চান্দগাঁও সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়।

এ ছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুরের নামে আরও ১০টি সংযোগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে পরের বছরের ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে এসব সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে এই ঘটনার পরে আইন মেনেই গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন কেজিডিসিএলের কর্মকর্তারা। তবে তাদের দাবি আমলে না নিয়ে তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে অবশ্য তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন।

কেজিডিসিএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ার হোসেন বলেন, সব নিয়ম মেনেই এই সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। বরং চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা কেজিডিসিএল থেকে বিভিন্ন সুবিধা চেয়ে না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। যা ছিল ভিত্তিহীন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!