কটেজ ভাড়া নিয়ে বিপাকে চবির ৩ হাজার শিক্ষার্থী

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে বাড়ি ফিরে গেছে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের আশেপাশের কটেজ ও মেসে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরাও বাড়ি ফিরেছে।

তবে শিক্ষার্থীরা এসময় কটেজ বা মেসে অবস্থান না করলেও তাদের গুনতে হচ্ছে ভাড়া। এতে করে বিপাকে পড়েছেন কটেজ ও মেসের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের দাবি, করোনাভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস যতদিন বন্ধ থাকে ততদিন কটেজের ভাড়া মওকুফ বা শিথিল করতে হবে। পাশাপাশি অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের কটেজ বা মেসের ভাড়া পরিশোধের দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে সাড়ে ২৫ হাজার। ১১টি আবাসিক হল ও একটি হোস্টেল মিলিয়ে মোট ৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে ক্যাম্পাসে। সে হিসেবে মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা করতে পেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী শহর ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থাকে। এর মধ্যে ক্যাম্পাসের পাশের এলাকাগুলোতে কটেজ ও মেসে থাকে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। করোনাভাইরাসের এই সময়ে তারা কষ্টে দিন পার করছেন। সেজন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে এই সংকটের সময়ে শিক্ষার্থীদের বাসা ভাড়া মওকুফ করা হোক। তবে অনেক শিক্ষার্থী ভাড়া অর্ধেক কমালেও তারা উপকৃত হবেন বলে জানান।

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ধর্মরাজ বলেন, ‘আমরা যারা টিউশন ও পার্টটাইম কাজের মাধ্যমে পরিবার ও নিজের পড়ালেখার খরচ চালাই তারা কি করে এতো মাসের ভাড়া পরিশোধ করবো? আমরা চাই প্রশাসনের সহযোগিতায় অন্ততপক্ষে দুই তিন মাসের কটেজ ভাড়া মওকুফ করা হোক।’

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী দেওয়ান তাহমিদ বলেন, ‘বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারির এই বিশেষ পরিস্থিতিতে এরকম অনেক শিক্ষার্থীর উপার্জনের পথ বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে মাসের পর মাস জমতে থাকা বাসা ভাড়া পরিশোধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব না।’

মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাসলিমা সুলতানা রিপা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের এই মহামারি পরিস্তিতি স্বাভাবিক না হলে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আমরা যারা টিউশন করে নিজেদের খরচ চালাই তাদের কাছে কটেজ ভাড়া পরিশোধ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় প্রশাসনকে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে অনেক বন্ধ গেছে। তখনও ভাড়া কমানো বা শিথিলের সুযোগ ছিল না, এখনও নাই।’

মানবিক দিক থেকে বিবেচনার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বন্ধ তো আমরা দিইনি। তারা তাদের ইচ্ছায় বাড়িতে চলে গেছে। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটি একটি মানবিক আবেদন। বাড়ির মালিকরা বিষয়টি যেন মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে সেজন্য আমরা তাদের সাথে কথা বলবো।’

এমআইটি/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!