এলসিএল পণ্য দ্রুত খালাসে বিজিএমএকে বন্দরের চিঠি

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত এলসিএল কনটেইনারে (একই কনটেইনারে একাধিক আমদানিকারকের পণ্য) আমদানিকৃত গার্মেন্ট শিল্পের কাঁচামাল আনস্টাফিং ও ডেলিভারিতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সিএফএসগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি এলসিএল কনটেইনার থেকে আনস্টাফকৃত পণ্য সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এলসিএল পণ্য ডেলিভারি না নেওয়ার ফলে বন্দর কর্তৃক কাস্টমের নিকট হ্যান্ডওভারকৃত অকশন কার্গোর পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন সিএফএস/শেড থেকে আনস্টাফিংকৃত এলসিএল পণ্য দ্রুত ডেলিভারি নিতে বিজিএমইএকে (বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি) সম্প্রতি একটি দাপ্তরিক পত্র দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে জিসিবি ও সিসিটি-এনসিটি এলকায় মোট ১১ সিএফএস আছে। এই ১১ সিএফএসের আয়তন ৫৬ হাজার ২৮৪ বর্গমিটার এবং সিএফএসগুলোর পণ্য ধারণক্ষমতা ২৮ হাজার ১১৬ দশমিক ৫২ মেট্রিকটন। গত জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুইমাসে মোট ৮ হাজার ২৪২ টিইইউএস এলসিএল কনটেইনার আনস্টাফিং হয়েছিল এবং আনুমানিক ৬ হাজার ৭০০ টিইইউএস পণ্য ডেলিভারি গিয়েছিল। ওই সময়ে দেড় হাজার টিইইউএসেরও অধিক কনটেইনার পণ্য সিএফএসগুলোতে জমা ছিল। বুধবার (২২ মে) এই সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৮০০-৯০০ টিইইউএস কনটেইনার। ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু থেকে সপ্তাহের সাতদিনই ২৪ ঘণ্টা চালু আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২০১৭ সাল থেকে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানসমূহও সাতদিন ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতা চট্টগ্রাম বন্দরের সিএফএসসমূহের কার্যক্রমও একইভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত বিজিএমইএর সভাপতি বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন সিএফএস থেকে শুক্রবার, শনিবার ও অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতে এলসিএল পণ্য ডেলিভারির হার স্বাভাবিক দিনগুলোর তুলনায় এক চতুর্থাংশের কম। উপরন্তু এই ছুটির দিনগুলোতে সিএফএসে আনস্টাফিং কার্যক্রম অন্যান্য স্বাভাবিক দিনগুলোর মতই হয়। এতে উক্ত সিএফএসগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি এলসিএল কনটেইনার থেকে আনস্টাফিং করা পণ্য সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। যেহেতু বন্দরের কনটেইনার জেটিগুলোতে প্রতিদিন কনটেইনার জাহাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে অনুসারে ওই জাহাজগুলো থেকে প্রচুর সংখ্যক এলসিএল কনটেইনার রিসিভ করা হচ্ছে। শুক্রবার,শনিবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে এলসিএল পণ্য ডেলিভারি কম হওয়ার কারণে একদিকে যেমন এলসিএল কনটেইনার আনস্টাফিংয়ের হার কমছে। অন্যদিকে বন্দরের এলসিএল কনটেইনারের পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিএফএসসমূহে আনস্টাফকৃত এলসিএল পণ্য বন্ধের দিনগুলোতে ডেলিভারি নিশ্চিত করাসহ পণ্য ডেলিভারি নিলে এলসিএল কার্যক্রমে আরো গতিশীলতা আসবে।’

ওই চিঠিতে চট্টগ্রাম বন্দরে এলসিএল কনটেইনার বৃদ্ধির হার ও সিএফএসগুলোতে এলসিএল পণ্যজটের বিষয়টি বিবেচনা করে শুক্রবার, শনিবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে স্বাভাবিক দিনের মতো পণ্য আনস্টাফ হওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে এলসিএল পণ্য ডেলিভারি নেওয়ার মাধ্যমে কনটেইনার অপারেশনাল কার্যক্রম গতিশীলতা রাখার লক্ষ্যে বিজিএমইএর সভাপতির সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন,‘এলসিএল কনটেইনারের এক সাথে অনেক আমদানিকারকের পণ্য থাকে। এই পণ্যগুলো কনটেইনার থেকে আনস্টাফ করে শেডে রাখা হয়।শেড থেকে দ্রুত এসব পণ্য ডেলিভারি নেওয়ার জন্য বিজিএমইএকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!