বিনোদন প্রতিদিন : সোমবার দেওয়া ফেসবুক লাইভ ভিডিওর দাবি থেকে সরে এসেছেন রুবি। সালমান শাহর মৃত্যু প্রসঙ্গে বুধবার সকালের আরেকটি ভিডিওতে রুবি জানান, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তিনি জানেন না। তিনি বলেন, ‘হত্যা না আত্মহত্যা বলব না। আগেরবার ইমোশনাল হয়ে বলেছিলাম। এটা ইনভেস্টিগেশন করলে বের হবে।’
সালমান হত্যা মামলার ১১ জন আসামির মধ্যে অন্যতম রুবির পুরো নাম রাবেয়া সুলতানা রুবি। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে চাইনিজ স্বামী ও দুই সন্তানসহ অনেক বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি।
সোমবার রুবি বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’
বুধবার রুবি জানান, সম্প্রতি ছেলে ভিকির কাছে সালমানের মৃত্যুর সময়কার একটা ঘটনা শুনে সন্দেহ হয় তার। সালমানের মৃত্যুর পরপরই সামিরা (সালমানের স্ত্রী) একটি পুটলি পাশের ছাদে ছুড়ে ফেলার জন্য ভিকিকে দেয়। এ ঘটনা শুনে তার সন্দেহ হয়।
২১ বছরে নানা সময়ে সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা দাবি করেছেন রুবি। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি জানতামই না এটি খুন হবে। আমি তো পোস্টমর্টেম রিপোর্টের উপর বিশ্বাস করে বারবার আত্মহত্যা বলছি।’
আরো বলেন, ‘আমি হত্যা বা আত্মহত্যার সাক্ষী ছিলাম না। আমি যা শুনেছি সামিরার মুখে শুনেছি। সামিরার মুখে শুনে আত্মহত্যা বলেছি।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন ‘সামিরাকে কেন সামনে আনে না। ওর বাবা কেন ওর হয়ে কথা বলে। ওর স্বামী কেন কথা বলে। সামিরা কেন বলেন না, কী কারণ ছিল?’
ভিডিওতে মন্তব্যকারীদের প্রশ্নেরও জবাব দেন রুবি। তিনি বলেন, ‘এফবিআই, সিআইএ-র সঙ্গে কথা বলব। বাঙালির সঙ্গে কথা বলব না। বাঙালি কথা বুঝলে ২১ বছর এটা (সালমানের মৃত্যু রহস্য) ঝুলে থাকত না।’
আরো জানান, নিউইয়র্কে এ বিষয়ে জানাতে কনসাল জেনারেলের অফিসে গিয়েও দেখা পাননি।
ভিডিওতে কয়েকবার কোরআনের আয়াত উল্লেখ করেন রুবি, ‘জেনেশুনে তোমরা সত্যকে গোপন করো না।’ তাই তিনি সংসারের অশান্তি হবে জেনেও ভিডিওতে এসেছেন।
বললেন, স্বামী খুনের সঙ্গে জড়িত কিনা জানেন না। এর জন্য প্রমাণ চান। তবে এমন সন্দেহের পর এক বাড়িতে থাকলেও স্বামীর সঙ্গে তার দুরত্ব তৈরি হয়েছে। আরো বলেন, ‘আমার কিছু হলে ভাববেন না বাইরে মানুষ কিছু করেছে। আমার কাছের মানুষই করেছে।’
সোমবারের ভিডিও প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা নীলা ভাবির জন্য মেসেজ ছিল। ভাইরালে আমি বিশ্বাস করি না।’
রুবির সঙ্গে সালমানের পরিবারের সম্পর্ক নিয়ে অনেক কিছু উঠে এসেছে নব্বই দশকে লেখা সুপন রায়ের বই ‘সালমান শাহ অজানা কথা’য়। সেখানে বলা হয়, ‘রাবেয়া সুলতানা ওরফে রুবি থাকেন সালমানের ফ্ল্যাটের অর্থাৎ ইস্কাটন প্লাজার উত্তর পাশের বিল্ডিংয়ে। তিনি রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রশিদের মেয়ে। প্রয়াত ক্যাপ্টেন জামিল ছিলেন তার স্বামী। জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর যে ১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয় তার স্বামী ছিলেন তাদের একজন। বর্তমানে তিনি মে-ফেরার নামক বিউটি পার্লারের স্বত্বাধিকারী।’
১৯৯৩ সালে প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান সালমান শাহ। সব মিলিয়ে ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার বেশিরভাগই হিট। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন এ নায়ক। সালমানের মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে দুই দশক ধরে বিতর্ক চলছে।