ইপিজেডে জনতা-কওমী ছাত্র সংঘর্ষে আহত ১১, পুলিশ মোতায়েন

তিন শিক্ষক বরখাস্ত ও মসজিদের ইমামকে জুতা চুরি ঘটনার জের ধরে নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর নিউমুরিং এলাকায় কওমী সমর্থিত এহয়াউল উলুম আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ১১জন আহত হয়েছে বলা জানা গেছে। ঘটনার পর মাদ্রাসা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল সাড়ে সাতটায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আধঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সকাল ৮টা থেকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর ২টা) পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাদ্রাসায় প্রায় ২৪-৩০ জন পুলিশের একটি টিম মোতায়েন করা হয়েছে।

আহত স্থানীয়দের মধ্যে বহিষ্কৃত তিন শিক্ষক যথাক্রমে মাও. মুফতি নুরুল ইসলাম (৪৫), মাও. মুফতি নোমান (৪০), মাও. নুরুল ইসলাম দরবেশ (৪৬) ছাড়াও মাদ্রাসা শুরা কমিটির সদস্য মো. ইলিয়াস (৪৫), শাহজাহান মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫৫), একই মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা আলম (৪৬) রয়েছেন। অপরদিকে আহত মাদ্রাসা ছাত্ররা হলেন মো. আজম (২০), নুর মোস্তফা (২০), সাইফুল ইসলাম (২০), মো. হারুন (২০) ও মারুফ (২২)।

স্থানীয়রা জানান, ৩-৪ মাস আগে এহয়াউল উলুম আরাবিয়া শুরা কমিটি বিভিন্ন অনিয়ম দেখিয়ে তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করেন। এদের মধ্যে মাও. মুফতি নোমান মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদের ইমামতি করেন। শিক্ষকদের অনাকাঙ্ক্ষিত বহিস্কার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে একটা বিরূপ প্রক্রিয়া কাজ করছিল দীর্ঘদিন থেকে। এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে আজ সকালে ইমাম নোমানকে জুতা চুরি ঘটনায় মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা লাঞ্চিত করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ঘন্টাখানেক চলে এ সংঘর্ষ। পরে পুলিশ এসেই দু’পক্ষের লোকজনদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ইপিজেডে জনতা-কওমী ছাত্র সংঘর্ষে আহত ১১, পুলিশ মোতায়েন 1

আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম এই প্রসঙ্গে বলেন, আজ সকালে মসজিদের ইমাম নোমানকে বের করে দেওয়ার ইস্যু তুলে তার বিরুদ্ধে জুতা চুরির অপবাদ দেয় মাদ্রাসার লোকজন। তিনি ইমামতির পাশাপাশি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে আসছিলেন।

জানতে চাইলে মাদ্রাসার নির্বাহী পরিচালক মাও. হাসান মুরাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গত ৩-৪ মাস আগে মাদ্রাসার তিন শিক্ষক বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষকরা তাদের অনিয়মের কথা গোপন করে স্থানীয়দের ভুল বুঝিয়ে আজকে সকালে মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষ ঘটান। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত।

জানতে চাইলে ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর নুরুল হুদা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‌’স‌কাল সাড়ে সাতটার দিকে দু’শিক্ষককে বরখাস্তের ইস্যু ধরে স্থানীয় জনতার সাথে ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে মাদ্রাসায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। এ ঘটনায় কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’ তবে বড় ধরনের কোন হতাহত হয়নি বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে ইপিজেড থানার নিউমুরিং রোডে এহয়াউল উলুম আরাবিয়া কওমী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান এখানে প্রায় পাঁচশ’ ছাত্র রয়েছে। এ মাদ্রাসার শুরা কমিটির প্রধান পরিচালক হলেন চট্টগ্রামের পটিয়ার মুফতি আবদুল হালিম বুখারী।

আজাদ/আরিফ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!