চট্টগ্রামে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতিদিনই বাড়ছে ভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা। একই সাথে শনাক্তের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। আগের দিন মৃত্যু কম থাকলেও এদিন তা আবার বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৩৬ জনের দেহে। শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ১৪৫ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৯১ জন। শনাক্তের হার প্রায় ২২ দশমিক ০৩ শতাংশ। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন। মারা যাওয়া একজন ব্যক্তি নগরের বাসিন্দা। বাকি দুইজন নগরের বাইরের বাসিন্দা।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৫৬ হাজার ৬৩৩ জনে। মোট শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৪ হাজার ৫০৪ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১২ হাজার ১২৯ জন রয়েছেন। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ৬৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬৪ জন চট্টগ্রাম নগরের আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২০১ জন।
বুধবার (২২ জুন) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৮টি ও কক্সবাজারের একটি ল্যাবে ১ হাজার ৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৬৩ জনের জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২০ জন নগরের এবং ৪৩ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ৩৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনা শনাক্ত হন ৭৩ জন। যাদের মধ্যে ৪৯ জন নগরের। বাকি ২৪ জন উপজেলার রোগী।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১১ জনই নগরের, বাকি ৪ জন উপজেলার।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩২ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ২৪ জন নগরের এবং ৮ জন বিভিন্ন উপজেলার।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ৩ জন এবং উপজেলার ৫ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এছাড়া, নগরীর বেসরকারি করোনার ল্যাবগুলোর মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১১৪ জনের জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ২৪ জনই নগরের, বাকি ১ জন উপজেলার। শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা নগরের ১০ জন ও উপজেলার ৪ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জন করোনা রোগী পাওয়া যায়। এদের ৪ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার।
এছাড়া, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়নি।
এদিন, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ল্যাব, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাব এবং ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।
উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে লকডাউন ঘোষণা করা ফটিকছড়িতে সবচেয়ে বেশি ২২ জন করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া হাটহাজারীতে ২১ জন, সীতাকুণ্ডে ১৮ জন, মিরসরাইয়ে ১৫ জন, আনোয়ারা, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানের তিনজন করে, বোয়ালখালী ও পটিয়ায় দুজন করে এবং সন্দ্বীপে একজন রয়েছেন।
এমএহক