আদালতের আদেশ না মেনে জলাশয় ‘দখলে’ নেওয়ার চেষ্টা চট্টগ্রামের রেল রেক্টরের

বাধা পেয়ে লোকজন নিয়ে গেটে অবস্থান

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও চট্টগ্রামের রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমির (আরটিএ) জলাশয়ে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন ভারপ্রাপ্ত রেক্টর। এ সময় লিজগ্রহীতার লোকজনদের বাধার মুখে তিনি ঢুকতে না পেরে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করেন জলাশয়ের গেটমুখে।

তবে ভারপ্রাপ্ত রেক্টর জলাশয়ের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করতে গিয়েছিলেন বলে জানান। একই সঙ্গে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আদেশের কোনো কাগজ দপ্তরে নেই বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, আরটিএর প্রায় ২৫ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে জলাশয়টি। এই জলাশয় ২০১৫ সালে পাঁচ বছরের জন্য লিজ নেন সিলভার জুবিলী কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম। কিন্তু ২০২০ সালের এপ্রিলে লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এর আগেই তা বাতিল করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গিয়ে নিষেধাজ্ঞা আনেন তিনি। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি আরও এক বছরের জন্য বাড়ানোর আবেদন করেন শাহ আলম। গত ২৮ আগস্ট শুনানি শেষে উচ্চ আদালত তা আরও এক বছর বৃদ্ধি করেন।

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভারপ্রাপ্ত রেক্টর আতাউল হক ভূইয়া ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার নামে জলাশয়ের সীমানায় প্রবেশ করতে যান। এ সময় গেটে তালা থাকায় তারা প্রবেশ করতে পারেননি। এরপর লোকজন নিয়ে সেখানেই কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করেন আতাউল।

জলাশয়ের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সিলভার জুবিলী কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার মুশফিকুর রহমান মাশফী বলেন, ‘গেট তালাবদ্ধ থাকলে ভেতরে ঢুকতে ভারপ্রাপ্ত রেক্টরের সঙ্গে থাকা লোকজন তালা ভাঙার চেষ্টা করেন।’

সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর রফিক উল্লাহ বলেন, ‘জলাশয়ের জঙ্গল পরিষ্কার করার জন্য ঢুকতে চাইলে বাধা দেন লিজগ্রহীতার লোকজন।’

সিলভার জুবিলীর কনস্ট্রাকশনের এমডি শাহ আলম বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশ কর্তৃপক্ষকে দিলেও ভারপ্রাপ্ত রেক্টর আতাউল হক ভূইয়া লোকজন নিয়ে জলাশয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে পাঁচ বছরের জন্য জলাশয়টি লিজ নিই। ২০২০ সালের এপ্রিলে লিজের মেয়াদের শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এর আগেই রেল কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে আমার লিজ বাতিল করে দেয়। এরপর আমি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হই। আদালত আমাকে লিজ বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেন। সর্বশেষ এ বছরের সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এটি বাড়াতে আবেদন করলে আদালত গত ২৮ আগস্ট শুনানিতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ান।’

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেক্টর আতাউল হক ভূইয়া বলেন, ‘আরটিএ দপ্তরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনো কাগজ নেই। থাকলে তা পরে দেখবো।’ তবে তিনি জলাশয়ের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার জন্যই কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে জলাশয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে জানান।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রেক্টর আমার অধীনে না, বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত রেক্টর ভালো বলতে পারবেন।’

জেএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!