‘রেলে খালাসি নিয়োগ’ কুরিয়ারেই কোটি টাকার ঘুষ—১২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রায় সাড়ে সাত বছর আগে ৮৬৩ জন খালাসি নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। ওই নিয়োগে প্রার্থীদের মার্কসিটে জালিয়াতি, কোটা জালিয়াতি ও সনদ জালিয়াতি হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

শুধু তাই নয়, এসব চাকরি পাইয়ে দিতে এক কোটি দুই লাখ ৪৪ হাজার টাকা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে লেনদেনের প্রমাণও পেয়েছে সংস্থাটি।

এ ঘটনায় দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সাবেক রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকসহ (জিএম) মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।

বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্তরা হলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সৈয়দ ফারুক আহমদ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রদান যন্ত্র প্রকৌশলী ও খালাসি নিয়োগ কমিটির আহবায়ক মো. মিজানুর রহমান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন সিনিয়র ওয়েলফেয়ার অফিসার ও খালাসি নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব জোবেদা আক্তার, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন ব্রীজ ইঞ্জিনিয়ার ও খালাসি নিয়োগ কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এমএলএসএস হারাধন দত্ত, শাহাজানপুর রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া সুলতানা, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের খালাসি আবুল বশর খাঁন, টিকিট প্রিন্টিং প্রেস কলোনী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি দাশ, শাহাজানপুর রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মোক্তার হোসেন, মেসার্স ফাতেমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারি আমিরুজ্জামান আশীষ এবং মোছাম্মদ পারভীন আক্তার।

দুদক জানায়, দন্ডবিধি ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১৬৩ ও ১০৯ ধারা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ৪(২) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ৫(২) ধারায় অভিযুক্তদের একটি মামলা দায়ের করা হয়।

জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ জুলাইয়ে ৮৬৩ জন খালাসি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। নিয়োগের আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে প্রায় দুই বছর পর ২০১৫ সালে নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ নিয়োগ কমিটিতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে। সদস্য সচিব ছিলেন আরটিএ’র সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার জোবেদা আক্তার। কমিটির বাকি তিন সদস্য হলেন রফিকুল ইসলাম, এম এ জিন্নাহ ও শেখ খলিলুর রহমান।

২০১৮ সালের ১১ মে তড়িঘড়ি করে কমিটির বাকি তিন সদস্য পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করেই নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক ও প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দেশের বাইরে চলে যান।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ৮৬৩ জন খালাসি নিয়োগে অভিযুক্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তে আরও কেউ থাকলেও তাদেরকে এ মামলায়ং অভিযুক্ত করা হবে।’

মুআ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!