ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকা মেরে মালয়েশিয়ায় পালালেন এমপি সনির শ্বশুর

৫৪ মামলার ১০টির বিচার শেষ, ৬ বছরের সাজা

আট ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকা মেরে দিয়ে দুই বছর আগে মালয়েশিয়ায় পালিয়ে গেছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এমএস আলম ওরফে শাহ আলম। তার ঘাড়ে আছে আটটি ব্যাংকের ৫৪টি মামলা। ৬ মামলায় ইতিমধ্যে ৬ বছরের সাজাও হয়েছে তার। ময়দার মিল দিয়ে ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা এমএস আলম রায় হওয়ার পর থেকে গত দুই বছরে আর দেশে আসেননি। তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়াতেই তিনি স্থায়ী হয়েছেন।

চট্টগ্রামের সদরঘাটে মেসার্স আলম এন্ড কোং-এর এই স্বত্বাধিকারী এমএস আলম ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখযোগ্য না হলেও বছরের পর বছর কায়দা করে ঋণ বাগিয়েছেন ব্যাংক থেকে। ঋণ পেতে খাটিয়েছেন রাজনৈতিক প্রভাব। সেই টাকায় জমির ব্যবসা করে নিজে ফুলেফেঁপে উঠলেও আটটি ব্যাংক এখন তার কাছ থেকে পাবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। খেলাপি এই ঋণের টাকা আদায় করতে ব্যাংকগুলোর দায়ের করা মামলায় যখন রায় হতে শুরু করে, তখন সবার অগোচরে এমএস আলম ওরফে শাহ আলম পালিয়ে যান মালয়েশিয়ায়। সেখানে আগে থেকেই তার এক ছেলে মালয়েশিয়ার এক মেয়েকে বিয়ে করে স্থায়ী হয়েছেন।

এমএস আলমের অবর্তমানে দেশে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করছেন বড় ছেলে পারভেজ আলম হীরা। পারভেজের স্ত্রী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি সংরক্ষিত আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য। চট্টগ্রামভিত্তিক মাশরিফা ফুড প্রোডাক্টস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে নাম আছে এমএস আলমের। ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে পারভেজ আলম এবং ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছে তার কন্যা ফারজানা আলম এবং কনিষ্ঠ দুই পুত্র ফরহাদ আলম ও ফয়সাল আলমের নাম। এর মধ্যে ফারজানা আলম চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মনজুর আলমের ছেলের বউ।

আলম এন্ড কোং এর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে হোটেল হিরো সিটি, আলম এন্টারপ্রাইজ, আলম এন্ড কোং, এইচ আহমেদ এন্ড সন্স, শাওন এন্ড সন্স, মাশরিফা ফুড প্রোডাক্টস, মামিয়া ড্রিংকিং ওয়াটার, মামিয়া ফ্লাওয়ার মিল। এক সময় চারভাই মিলে পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনা করতেন। পরবর্তীতে ব্যাংকের ঋণ আটকে গেলে ভাইদের থেকে আলাদা হয়ে সন্তানদের নিয়ে ব্যবসা চালু করেন আলম এন্ড কোং-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম। অপর তিন ভাই দিদারুল আলম, মোহাম্মদ সোলায়মান ও মোহাম্মদ ইলিয়াছ আলাদা আলাদা ব্যবসা করছেন। এদের কেউ কেউ দুবাইয়েও ব্যবসা করছেন।

জানা গেছে, ২০১১ সালের পর থেকে বিভিন্ন ব্যাংক ঋণের টাকা পেতে এমএস আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শুরু করে। ৩০০ কোটি টাকা আদায়ের জন্য তার বিরুদ্ধে আটটি ব্যাংক সবমিলিয়ে ৫৪টি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে সাতটি শুধু অর্থঋণ আদালতে দায়ের করা, যার মধ্যে চারটি মামলার রায় হয়েছে ইতিমধ্যে। বাকি সবগুলোই এনআই অ্যাক্টের মামলা। ইতিমধ্যে এনআই অ্যাক্টের ৬ মামলায় তার ৬ বছরের সাজাও হয়েছে।

২০১৮ সাল পর্যন্ত অন্তত ৮ বছর এমএস আলম উচ্চ আদালতের ‘স্টে অর্ডার’ নিয়ে নিয়ে সময়ক্ষেপণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামলাগুলোর রায় ঠেকাতে না পেরে ২০১৮ সালের শেষ দিকে স্ত্রীসহ মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যান এমএস আলম। সেখানে নর্দামব্রিয়া ইউনিভার্সিটির নিউ ক্যাসেল বিজনেস স্কুলে পড়তে যাওয়া তার দ্বিতীয় পুত্র ফরহাদ আলম ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মালয়েশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করে আগে থেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।

সেই থেকে এমএস আলমকে বিভিন্ন সময়ে পরিবারসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। গত বছরের শুরুর দিকে তিনি সপরিবারে বেড়াতে যান ইন্দোনেশিয়ায়। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউন শুরু হয়ে গেলে স্ত্রী আয়েশা বেগমসহ আটকা পড়েন সেখানে। লকডাউন শেষ হওয়ার পর আবার মালয়েশিয়ায় ফেরেন তারা। গত বছরের অক্টোবরে স্ত্রী বাংলাদেশে ফিরলেও এমএস আলম কুয়ালালামপুরেই আছেন ছেলের সঙ্গে। গত বছরের শুরুতে চিকিৎসার জন্য তিনি কিছুদিন ভারতেও গিয়েছিলেন মালয়েশিয়া থেকে।

এমএস আলম ওরফে শাহ আলমের মালিকানাধীন আলম এন্ড কোং-এর আদি প্রতিষ্ঠান ছিল চট্টগ্রামের সদরঘাট রোডে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ‘হোটেল হিরো সিটি’। এর পাশাপাশি একসময় তার মূল ব্যবসা ছিল ‘এয়ার বাংলা ট্রাভেল’ নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সির। পরে ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমের রডের এজেন্সিও নেন। ২০০০ সালের দিকে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা শুরু করেন খাতুনগঞ্জে। প্রথমদিকে লোকাল ট্রেডিং করলেও পরবর্তীতে শুরু করেন আমদানি ব্যবসা।

২০১১-১২ সালের দিকে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা ও আমদানির নামে ঋণ নিতে শুরু করেন এমএস আলম। এই ঋণের টাকায় ব্যবসা না করে তিনি কিনতে থাকেন মূলত জমি। মালয়েশিয়ায়ও বড় অংকের টাকা নিয়ে গেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তাতেই আটকে যায় কোটি কোটি টাকার ঋণ। সেই ঋণ কোনো ব্যাংকই আর ফেরত পায়নি। দিনে দিনে সেই অংক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকায়।

সদরঘাট পূবালী ব্যাংকের সবচেয়ে বড় খেলাপি

এমএস আলমের মালিকানাধীন হোটেল হিরো সিটির পাশেই পূবালী ব্যাংকের সদরঘাট শাখা। কয়েক যুগ ধরে ব্যাংকটির সঙ্গে তাদের ব্যবসা ছিল। এর সুযোগ নিয়ে এমএস আলম সেই যে ঋণ নিয়েছিলেন, তার পরিমাণ এখন ৫২ কোটি টাকা। এই ঋণের বিপরীতে হোটেল হিরো সিটি, খুলশীর বাড়ি এবং মাশরিফা ফুড প্রোডাক্টসের ভূমিসহ স্থাপনাগুলো ব্যাংকে বন্ধক রাখা হলেও ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সম্পত্তিগুলো বিক্রি করে ঋণের মাত্র ৩০ ভাগ আদায় হবে। গত ১০ বছর ধরে পূবালী ব্যাংক সদরঘাট শাখার সবচেয়ে বড় ঋণখেলাপি— আলম এন্ড কোং।

ঋণের এই টাকা ফেরত না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার এমএস আলমের বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে ২৭টি মামলা দায়ের করে পূবালী ব্যাংক। ২০১৩-১৪ সালে দায়ের করা এসব মামলার মধ্যে গত বছরের ১১ এপ্রিলে একটি মামলার (১২৩/২০১৩) রায় হয়েছে। রায়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহ আলমকে এক বছরের সাজা ও চেকের সমরিমাণ (১ কোটি ২৮ লাখ টাকা) অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরও একটি চেকের মামলা রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া ২০১৫ সালে দায়ের করা অর্থঋণ আদালতে দায়ের করা মামলাটি এখন শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।

গম আমদানির নামে ৬৪ কোটি টাকার ঋণ

এমএস আলম ওরফে শাহ আলমের মালিকানাধীন আসাদ করপোরেশনের কাছে এনসিসি ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার পাওনা ৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০১২ সালে গম আমদানির নামে এই ঋণ নেওয়া হয়। এই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে শাহ আলমের ১১ কাঠা জমিসহ তিনটি ভবন বন্ধক থাকলেও ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এসবের বর্তমান বাজার মূল্য ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার বেশি হবে না।

ঋণের টাকা আদায় করতে এনসিসি ব্যাংক এমএস আলমের বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে দুটি মামলা করে। দুটি মামলাতেই যথাক্রমে গত বছরের ১৯ জুন ও ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে এক বছর করে কারাদণ্ড ছাড়াও সমপরিমাণ অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ২০১৮ সালে এনসিসি ব্যাংকের দায়ের করা অর্থঋণ (৫১১/২০১৮) মামলায়ও গত বছরের ১১ নভেম্বর সাজা হয়েছে শাহ আলমের।

ব্যাংক এশিয়া পাবে ২৯ কোটি টাকা

আলম এন্টারপ্রাইজের কাছে ব্যাংক এশিয়া খাতুনগঞ্জ শাখা পাবে প্রায় ২৯ কোটি টাকা। গম ও চিনি আমদানির জন্য ২০১২ সালে এই ঋণ নিয়েছিল এমএস আলমের প্রতিষ্ঠানটি। এর বিপরীতে বিপরীতে মেহেদীবাগের আমিরবাগ এলাকায় ৫ গন্ডা জমিসহ একটি ৪ তলা ভবন বন্ধক রয়েছে। তবে গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে নিলাম ডেকেও কোনো দরদাতা পায়নি ব্যাংক এশিয়া। ২০১৬ সালে ব্যাংক এশিয়া এমএস আলমের বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে দায়ের করে তিনটি মামলা। বর্তমানে মামলাগুলোর বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে ব্যাংকটি অর্থঋণ আদালতেও অপর একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের পাওনা ৯০ কোটি টাকা

২০১০ সালে প্রিমিয়ার ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে এমএস আলম ঋণ নিয়েছিলেন মেসার্স আইমান এন্টারপ্রাইজের নামে। ব্যাংকটি এখন তার কাছ থেকে পাবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। পাওনা আদায়ে ২০১৪ সালে দায়ের করা এনআই অ্যাক্ট মামলাটি (২৪৫/২০১৪) বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। ব্যাংকের মালিকপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় ঋণের বিপরীতে জামানত ছিল খুবই নগণ্য।

ওয়ান ব্যাংক পাবে ২৫ কোটি টাকা

ওয়ান ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা শাহ আলমের প্রতিষ্ঠান শাওন এন্ড সন্স থেকে পাবে ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানটির জঙ্গল লতিফপুর এলাকার ৮০ শতক জমি বন্ধক থাকলেও ব্যাংকের ভ্যালুয়েশন অনুযায়ী জমিটির মূল্য মাত্র এক কোটি টাকা। ২০০৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে নেওয়া এই ঋণের টাকা আদায় করতে ২০১০ সালে অর্থঋণ আদালতে মামলা (৬৩/২০১০) দায়ের করে ব্যাংকটি। পরে ২০১৬ সালে জারি মামলা করা হয়। এছাড়া এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে ছয়টি মামলা দায়ের করেছে ব্যাংক। মামলাগুলোর মধ্যে দুটিতে উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থা রয়েছে। তিনটি রয়েছে চার্জ গঠনের অপেক্ষায়। বাকি একটি সাক্ষীর অপেক্ষায়।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের পাওনা ৯ কোটি টাকা

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে এমএস আলম ওরফে শাহ আলম ঋণ নেন চট্টগ্রাম এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে। ব্যাংকটি তার কাছ থেকে পাবে ৯ কোটি টাকা। ঋণের টাকা পেতে শাহ আলমের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে এনআই অ্যাক্ট ও অর্থঋণ মামলা দায়ের করে ব্যাংকটি। এর মধ্যে এনআই অ্যাক্টে দায়ের করা মামলায় (৬০৭/২০১৭) শাহ আলমকে এক বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। অন্যদিকে অর্থঋণ মামলাটি (৪৬২/২০১৭) বর্তমানে জেরার পর্যায়ে রয়েছে।

১৩ কোটি পাবে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের জিইসি শাখা থেকে ২০১২ সালে ঋণ নেয় আলম এন্ড কোং। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংকের মোট পাওনা ১৩ কোটি টাকা। এই ঋণের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির ১১৯ জমি বন্ধক রয়েছে ব্যাংকের কাছে। এর মধ্যে নগরীর বউবাজার এলাকায় ১৬ শতক এবং জঙ্গল লতিফপুর এলাকা ১০৩ শতক জমি থাকলেও সেগুলো চিহ্নিত করা নেই ব্যাংকের কাছে। পাওনা আদায়ে ২০১৫ সালে অর্থঋণ আদালতে ব্যাংকটির দায়ের করা মামলাটি অর্থঋণ আদালত থেকে রায় পাওয়ার পর এখন জারি মামলা হিসেবে রয়েছে।

ইস্টার্ন ব্যাংকের পাওনা ১২ কোটি টাকা

ইস্টার্ন ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে শাহ আলম ঋণ নেন মেসার্স পারভেজ এন্টারপ্রাইজের নামে। ২০০৮ সালে নেওয়া সেই ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ঋণ আদায়ে ২০১০ সালে অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে ব্যাংকটি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ২০১৩-২০১৬ সালের বিভিন্ন সময়ে এনআই অ্যাক্টে সাতটি মামলা দায়ের করে ব্যাংকটি। এর মধ্যে ৬১২/২০১৪ নম্বর মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে এবং ৩৭২৮/২০১৪ নম্বর মামলায় গত অক্টোবরে সাজা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহ আলমের বিরুদ্ধে।

যা বলছেন ব্যাংকাররা

ব্যাংক এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জোনাল হেড (চট্টগ্রাম) একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পারিবারিকভাবে ব্যবসায় যুক্ত হলেও শাহ আলম খুবই ধূর্ত প্রকৃতির লোক। যার ফলে ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সহজে ঋণ সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু ব্যবসার জন্য ঋণ নিলেও সেই টাকা বিনিয়োগ করে তিনি জমি কিনেছেন। এভাবে ব্যাংকের টাকা আটকে যাওয়ায় পাওনাদার ব্যাংকগুলো টাকা উদ্ধারে একের পর এক মামলা দায়ের শুরু করে।’

প্রিমিয়ার ব্যাংকের ইভিপি ও খাতুনগঞ্জ শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক (বর্তমান জুবলী রোড শাখার ব্যবস্থাপক) নুরুল আবছার বলেন, ব্যাংকের তৎকালীন উর্ধ্বতন কর্মকতাদের ম্যানেজ করে ঋণ ভাগিয়ে নিয়েছেন শাহ আলম। আমি খাতুনগঞ্জ শাখায় দায়িত্ব পালনকালে অনেক চেষ্টা করেছি এই টাকা উদ্ধারে। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীর টাকা পরিশোধের মানসিকতা নেই। তাই আমরা বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। এখন বিভিন্ন ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় সাজা হতে শুরু হলে তিনি বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

খুলশী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীনুজ্জামান ও থানার ওয়ারেন্ট অফিসার আনোয়ার হোসাইন জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী শাহ আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় সাজা হওয়ার পর কয়েকবার তার দক্ষিণ খুলশীর বাসায় গিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি তিনি বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অবলম্বনে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!