চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কেডিএস লজিস্টিকস লিমিটেডের ইয়ার্ডে রেখে তৈরি পোশাকের একটি চালান ফিলিপাইনে পাঠাচ্ছিল ঢাকার প্রতিষ্ঠান আরএম সোর্সিং বাংলাদেশ। অথচ ওই চালানে ঘোষণার চেয়ে ছিল অনেক বেশি পণ্য। এভাব প্রতিষ্ঠানটি ৬ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৮৮ টাকা বিদেশে পাচারের চেষ্টা করছিল। তবে গোপনে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা ওই চালানের রপ্তানি থামিয়ে দিয়ে জব্দ করেছে পুরো চালানটিই।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বেসরকারি কনটেইনার ডিপো ‘কেডিএস লজিস্টিকস লিমিটেডের’ মাধ্যমে ঢাকার উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৬৯ প্লটের রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের ঠিকানার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আরএম সোর্সিং বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের একটি চালান ফিলিপাইনে পাঠানোর সব প্রক্রিয়া শেষ করে এনেছিল। তাদের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের সদরঘাটের বেঙ্গল প্রগ্রেসিভ এন্টারপ্রাইজ গত ১১ জানুয়ারি বিল অফ এক্সপোর্টও দাখিল করে।
তবে এর আগেই গোপনে তথ্য পেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা পণ্যের ওই চালানটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে দেখে। এতে দেখা যায়, চালানে ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য রয়েছে।
কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা জানায়, চারটি বিল অব এক্সপোর্টের বিপরীতে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আইএফআইসি ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি করে। রপ্তানিকারকের ঘোষণা করা চারটি চালানে মোট ২৪ হাজার ৩৪৪ পিস বা প্রতি চালানে ৬ হাজার ৮৬ পিস থাকার কথা থাকলেও চার চালানে পাওয়া গেছে মোট ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩২২ পিস পোশাক। ঘোষণার বাইরে অতিরিক্ত পাওয়া গেছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭৮ পিস পোশাক।
পণ্যের ওই চালানের ঘোষণায় ৪১ হাজার কেজি ওজন বলা হলেও বাস্তবে পাওয়া গেছে ৯০ হাজার ৪৫০ কেজি। এ হিসাবে প্রায় ৫০ হাজার কেজি পণ্য বেশি পাওয়া গেছে।
রপ্তানিকারকের ষোঘণা মতে, প্রতি চালানের বিপরীতে মোট ২৯ হাজার ৯৪৪ ইউরো (প্রতি পিসের ঘোষিত মূল্য ১ দশমিক ২৩ ইউরো) বা ২৯ লাখ ৬০ হাজার ২৪৮ টাকা পেতো চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।
তবে ওই চালানে বাস্তবে যে পণ্য পাওয়া গেছে, তাতে কাস্টমস পেতো বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ কোটি ৯২ লাখ ২৭ হাজার ৯৫২ টাকা। সবমিলিয়ে ঢাকার ওই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মোট চারটি চালানে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৮৮ টাকা বিদেশে পাচারের চেষ্টা করে।
কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা বলেন, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১১৩টি পণ্যচালান রপ্তানি করেছে। এসব চালানে ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে অর্থপাচার হয়েছে কিনা তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দোষীদের চিহ্নিত করে কাস্টমসের আইন অনুসারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এএস/সিপি