চট্টগ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় রাজশাহীর কারাগারে

যৌতুক চেয়ে মারতেন স্ত্রীকে, পরে তালাক

অগ্রণী ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এসএম মশিউর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজশাহীর একটি আদালত।

সাবেক স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ব্যাংক কর্মকর্তা মশিউর রহমান। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনসুর আলম ওই ব্যাংক কর্মকর্তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজশাহীর সোনালী ব্যাংকের কাদিরগঞ্জ গ্রেটার রোড শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও নির্যাতনের শিকার তাসমীন এহসান ওই মামলা দায়ের করেন।

গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে এই ব্যাংক কর্মকর্তার (মশিউর রহমান) বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী। একইসঙ্গে যৌতুক না পেয়ে অভিযুক্ত স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে জানানো হয়।

ব্যাংক কর্মকর্তা মশিউরের সাবেক স্ত্রী তাসমীন এহসান জানান, তার সাবেক স্বামী ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে বেদম মারধর করেন। ইস্ত্রি দিয়ে তার হাত পুড়িয়ে দেন। এরপর দুই দিন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি থেকে তিনি চিকিৎসা নেন এবং সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার পর থেকে তার সাবেক স্বামী তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

নির্যাতনের শিকার তাসমীন আরও জানান, তিনি রাজশাহীর মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে থাকেন। বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে মশিউর রহমান লোক পাঠান। আর তিনি তালাক দেওয়ার আগেই এক সেনা কর্মকর্তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করেন। তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ওই সময় সাবেক স্ত্রীর এমন অভিযোগের বিষয়ে মশিউর রহমান বলেছিলেন, তিনি চট্টগ্রামে থাকেন। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ তার তালাক কার্যকর হয়েছে। সুতরাং তাকে নির্যাতনের প্রশ্নই ওঠে না। সাবেক স্ত্রীর সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও জানিয়েছিলেন, সন্তানরা বাড়িতে আছে বলে তিনি বাড়ি বিক্রি করেননি। হুমকি দেওয়ার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!