পুঁথিগত বিদ্যায় নয়, নৈতিক শিক্ষার আলোয় শিশুদের শিক্ষিত করলেই সুন্দর দেশ ও সৎ চরিত্রবান নাগরিক গঠন সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন খ্রিস্টীয় চট্টগ্রাম ডায়াসিসের আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার সিএসসি।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের জামালখানস্থ সেন্ট মেরী’স স্কুলের নবনির্মিত আর্চবিশপ মজেস ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
প্রদীপ প্রজ্বলন, খ্রিস্টীয় ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা, বেলুন ও পায়রা ওড়ানো এবং আতশবাজি পোড়ানোর পর ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার সময় বলেন, মিশনারি স্কুলগুলোর কাজ চরিত্রবান নাগরিক গড়ে তোলা। এজন্য সুশিক্ষা ও সৃজনশীলতা সৃষ্টির জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবস্তরের শিক্ষার্থীরা যাতে মননশীলতার সুযোগ পায় সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে শিশুদের মন-মানসিকতা বিকশিত হয়। চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি স্কুল মিশনারির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। সমাজে যোগ্য সৎ নিষ্ঠাবান ও প্রতিভাবান নাগরিক সৃষ্টিতে সেন্ট মেরীস স্কুলের অবদান ঈর্ষণীয়। নতুন ভবন তৈরির মধ্য দিয়ে এ সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হল।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষিকা সিস্টার মেরি সঙ্গীতা। এতে বক্তব্য রাখেন বৈশাখী টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ম্যানেজার মিজানুর রহমান, নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সিরাজুদৌল্লাহ চৌধুরী, স্কুল কমিটির সভাপতি ফাদার পঙ্কজ ইগনেসিয়াস পেরেরা।
সভাপতি বলেন, নতুন ভবন হওয়ায় অনেকের প্রত্যাশা বেড়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের এই প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অতিথিরা শিক্ষায় বিশেষ অবদান রেখে চলায় এ স্কুলের এসএসসি পর্যন্ত চালুর দাবি জানান। এতে বহু শিক্ষার্থী ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে না বলে তারা মন্তব্য করেন।
প্রধান শিক্ষক সিস্টার মেরি সঙ্গীতা বলেন, শিক্ষার্থীদের কারিকুলামের সাথে সহপাঠ, নিজ নিজ ধর্ম শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক মেধা বিকাশের সাথে শৃঙ্খলা শিক্ষা দেওয়া হয়।
এর আগে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। বিপুল শিক্ষার্থী , সাবেক শিক্ষক, অতিথি, পালপুরোহিত এবং অভিভাবকদের উপস্থিতিতে স্কুল প্রাঙ্গণ মিলনমেলায় পরিণত হয়।
পরে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়। এতে ইংরেজি নাটিকা পরিবেশন করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া মনোজ্ঞ নৃত্য, জাতীয় পতাকা ও স্কুলের পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানকে জাঁকজমকপূর্ণ করা হয়।
প্রধান অতিথি চলতি বছরের স্কুলের বিশেষ ম্যাগাজিন ‘নবাঙ্কুর’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রার্থনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের ইতি টানা হয়।