স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা, ৯ বছর পর ঘাতক স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সাধারপাড়া বৈদ্যনি রাস্তা এলাকার গৃহবধূ শামীমা আকতারকে (২৫) পিটিয়ে হত্যার পর লাশটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল ফাঁসিতে। শুরুতে এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে শামীমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পুলিশও একে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে রেকর্ড করে।

২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বরের এই ঘটনার কিছুদিন পর রহস্যের জট খুলতে শুরু করে। তাতে দেখা যায়, স্বামী জাহাঙ্গীর আলমই স্ত্রী শামীমার ঘাতক। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি চলেই আসছিল। জাহাঙ্গীর একপর্যায়ে বিদেশ যাওয়ার জন্য স্ত্রী শামীমা আকতারের পরিবারের কাছে যৌতুক চান। যৌতুক না দেওয়ায় একপর্যায়ে শামীমাকে পিটিয়ে হত্যা করেন জাহাঙ্গীর। একে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর চেষ্টা হিসেবে স্ত্রীর লাশ তিনি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন গোয়ালঘরে।

পরে এই ঘটনায় এ ঘটনায় শামীমা আকতারের ভাই সোলেমান বাদি হয়ে মামলা করেন। ২০১২ সালের ২৩ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার শুরু হয়। মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

নয় বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মশিউর রহমান খান। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) তিনি এই আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জাহাঙ্গীর আলম বোয়ালখালী উপজেলার আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে। জাহাঙ্গীরকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। তবে মামলার আরেক আসামি জাহাঙ্গীরের ভাই পলাতক আবদুল আলমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পাওয়া জাহাঙ্গীর আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জাহাঙ্গীর ও শামীমার সংসারে তওসিফ নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। শামীমার মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল দেড় বছর।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!