সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তদের জায়গা চট্টগ্রামে হবে না, উল্টো রথযাত্রায় নওফেল

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘চট্টগ্রামে আমরা একসঙ্গে আনন্দ উৎসব করবো। পবিত্র ঈদে ও রথযাত্রার উৎসবে এক সঙ্গে আমরা শামিল হবো। চট্টগ্রামে কোনো সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না। এটাই আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। কোনো অপকৌশলের রাজনীতি বাংলাদেশে করতে দেওয়া হবে না।’

বুধবার (২৮ জুন) নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির ও গৌর নিতাই আশ্রম সম্মুখে ডিসি হিল প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) চট্টগ্রাম উল্টো রথযাত্রার ধর্মীয় মহাসম্মেলন আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ধর্মীয় মহাসম্মেলনের উদ্বোধক নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘হাজার বছর ধরে এই ভূখণ্ডে জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। সম্প্রীতি এদেশের মানুষের সুমহান ঐতিহ্য। বিশ্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশি ধর্মপরায়ণ বলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সর্বদাই সহনশীল। বাংলাদেশের মূল শক্তিই হলো বাঙালি জাতিসত্তা। জাতি হিসেবে আমরা বাঙালি। সবার ভাষাই বাংলা। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করলেও উৎসবের আনন্দ সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে উদযাপন করে।’

প্রধান বক্তা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এখনও বিশ্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম উদাহরণ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর সংহতি ও জাতীয় ঐক্য ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। হিন্দু-মুসলমান ঐক্যবদ্ধ হয়ে ব্রিটিশদের বিতাড়িত করেছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করেছিল।’

নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ পণ্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে ও তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারীর সঞ্চালনায় রথযাত্রায় মহান আশির্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসকনের হেডকোয়ার্টার ভারতের মায়াপুরের অন্যতম সন্যাসী শ্রীমৎ ভক্তি দয়িত আদি পুরুষ স্বামী মহারাজ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর প্রফেসর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, ফটিকছড়ি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ছালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন, নানুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিউল আযম, জন্মাষ্টমী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, দক্ষিণ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের লায়ন সন্তোষ কুমার নন্দী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি সুজিত দাশ, সঞ্জয় ভৌমিক কন্কন, মহিলা কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সহ-সভাপতি অকিঞ্চন গৌর দাস ব্রহ্মচারী, সুবল সখা দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী।

উল্টোরথের মহাশোভাযাত্রা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নন্দনকানন শ্রী শ্রী রাধামাধব মন্দিরে এসে শেষ হয়। মহাশোভাযাত্রায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভক্তবৃন্দসহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, পৌরাণিক সাজ ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যোগ দেয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!