সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের দাবি সিইউজেএনের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দোস্ত মোহাম্মদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চিটাগং ইউনিভার্সিটি এক্স জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (সিইউজেএন)।  

বুধবার (২১ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে সিইউজেএন এর সভাপতি হামিদ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে সিইউজেএন নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি সোমবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে একটি চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও উপ-দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হানসহ ১০-১২ জন ছাত্রলীগের কর্মী চবিসাসের সদস্য ও অনলাইন পোর্টাল ঢাকা স্টেটের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী দোস্ত মোহাম্মদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এসময় সিনিয়র পরিচয় দিলে গরম চা ও চায়ের কাপ ছুঁড়ে আঘাত এবং সাংবাদিক পরিচয় জানার পর বেল্ট দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে, পেটে লাথিসহ এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মেরে দোস্ত মোহাম্মদকে হত্যার চেষ্টা করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা। দোস্ত মোহাম্মদ আগে থেকেই কিডনিসহ নানা শারিরীক জটিলতায় ভুগছেন। এখন পেটে লাথি মারায় দোস্ত মোহাম্মদের কিডনি রোগের জটিলতা আরও বেড়েছে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন আছেন।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অকারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে মৃত্যুর মুখে পাঠিয়ে দেয়া হলো। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ
ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। জানতে পেরেছি হামলাকারীরা এখনো হলেই অবস্থান করছেন। সময়ক্ষেপনের মাধ্যমে প্রশাসন কি অতীতের মতো এই ঘটনাটিকেও আড়াল করতে চায়—এটিই আমাদের প্রশ্ন।’

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি প্রধান অভিযুক্ত চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ (আইন, ২০১৭-১৮) এর আগে ২০২১ সালেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার হয়েছিলেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগও উঠে। আরেক অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হানের (সমাজতত্ত্ব, ২০১৮-১৯) বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি অস্থায়ী বহিষ্কারের নামে দায়সারা শাস্তি দিয়ে তাদের আরও আশকারা দেয়া হয়েছিল। আমরা আর এই অস্থায়ী বহিষ্কারের নাটক দেখতে চাই না।’

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, ‘ক্যাম্পাসে সাংবাদিক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কারের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে আমরা আশাবাদী। এর আগে চবি সংবাদিক সমিতির সদস্য দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আক্তারের ওপর হামলার ভিডিও চিত্র থাকার পরও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা একই সঙ্গে সেই ঘটনায় জড়িতদেরও শাস্তি দাবি করছি। আমরা আশা করব চবি সাংবাদিক সমিতির বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে প্রশাসন জড়িতদের বিরুদ্ধে আমাদের দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করবে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!