সন্দ্বীপ ঘাটে হঠাৎ ভাড়া বাড়িয়ে ইজারাদার এখন দায় দিচ্ছেন অন্যের

কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রামের কুমিরা থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছাড়া নৌরুটে স্পিডবোট ও ট্রলারের ভাড়া বাড়ানোর পর তীব্র সমালোচনার মুখে এবার অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিলেন ঘাট ইজারাদার।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) নৌরুটের ভাড়া ২৫০ টাকা নেওয়া হলেও মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ তা বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়। এ নিয়ে যাত্রী ও ঘাট ইজারাদারের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটছে। এভাবে ২০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোয় সন্দ্বীপের মানুষ ক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় গুপ্তছড়া-কুমিরা ফেরীঘাটের ভাড়া বাড়ানোর বিষয় নিয়ে সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাবে সংবাদকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন ঘাট ইজারাদার চেয়ারম্যান এসএম আনোয়ার হোসেন। এ সময় তিনি জ্বালানি তেল ও স্পিডবোট যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধি এবং গত নভেম্বর থেকে নৌপরিবহনে সরকারিভাবে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় ঘাটেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে বলে জানান। তবে তিনি ভাড়া বাড়ানোর আগে যাত্রীদের অবহিত না করার বিষয়টি সঠিক ছিল না বলেও মন্তব্য করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ যাত্রীরা যেখানে ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে, সেখানে উল্টো ভাড়া বৃদ্ধির খামখেয়ালিপনা কেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে ইজারাদার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘২০১৩ সালে আমি যখন ঘাটের দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন জেলা পরিষদকে প্রতিদিন ৬৯ হাজার টাকা পরিশোধ করতাম। কিন্তু এখন পরিশোধ করি প্রতিদিন ৯০ হাজার।’

তিনি বলেন, ‘ওই সময় স্পিড বোটের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৪০০ টাকা। গত ৮-৯ বছরে সাধারণ যাত্রী ও সংবাদকর্মীদের অনুরোধে কয়েক দফায় জনপ্রতি ২৫০ টাকা পর্যন্ত কমানো হয়েছে। এই কয়েক বছরে জেলা পরিষদের ইজারার মূল্য বেড়েছে। কিন্তু স্পিডবোটের ভাড়া বাড়েনি বরং কমেছে।’

সংবাদকর্মীরা এ সময় ঘাট ইজারাদারের অংশীদার কারা এবং কে বা কারা সুবিধা ভোগ করেন— এ নিয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার বলেন, ‘কাগজপত্রে যেহেতু ইজারাদার আমি, তাই তাদের নাম প্রকাশের যৌক্তিকতা বা প্রয়োজন নেই।’

তবে তিনি অভিযোগ করেন, সাদা টিকেটধারী ভাড়াবিহীন ভিআইপি যাত্রীর কারণে ঘাটের ইজারাদারের অনেক টাকা গচ্চা যায় এবং সাধারণ যাত্রীদের ওপর এর প্রভাব পড়ছে। ফলে বাড়ছে ভাড়াও।

ভিআইপি টিকেটবিহীন এই যাত্রীরা কারা— ইজারাদার অবশ্য এমন প্রশ্নের উত্তর বারবার এড়িয়ে যান।

একজন সংবাদকর্মী উক্ত রুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী কয়েকজন যাত্রীর অভিযোগের সূত্র ধরে বলেন, সরকারি কয়েকজন সৎ কর্মকর্তা ছাড়া প্রায় প্রতিটি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে ঝাড়ুদার পর্যন্ত সাদা বা ফ্রি টিকেট পাওয়ার কারণে প্রতি বৃহস্পতিবার সন্দ্বীপ ত্যাগ করে রোববারে ফিরে আসেন। এ সময়ে ফেরীঘাটে সৃষ্টি হয় নানা জটলা। এসব টিকেটবিহীন যাত্রীদের অনুমোদন দেন কারা কিংবা কোন্ যোগ্যতায় তাদের এ সুবিধা দেওয়া হয়— এ প্রশ্নেরও কোনো জবাব দেননি ঘাট ইজারাদার আনোয়ার হোসেন।

পরে ইজারাদার আনোয়ার হোসেন আগের ভাড়া বহাল রাখার ব্যাপারে তার অন্যান্য অংশীদারদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়ার আশ্বাস দেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!