শোভনদন্ডী-পটিয়া-চট্টগ্রাম রুটে নতুন বাস, চলবে সপ্তাহে ৬ দিন

রোববার থেকে শুরু চলাচল

শোভনদন্ডী-পটিয়া-চট্টগ্রাম রুটে রোববার (২৩ জুন) থেকে বাস চলাচল শুরু হচ্ছে।

এ অঞ্চলের মানুষ যাতে চট্টগ্রাম শহরে সহজে যাতায়াত করতে পারেন এজন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছেন পটিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দিদারুল আলম দিদার।

আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এ উদ্যোগকে সহযোগিতা করছেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরে  চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশী মানুষদের পরিবহন সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছেন অনেকেই। এই বাস সার্ভিসের মাধ্যমে সময় ও ভাড়া সাশ্রয় হবে। একইসঙ্গে যাত্রী হয়রানি ও দুর্ভোগ কমবে বলে আশা করছেন অনেকে।

জানা গেছে, পটিয়া উপজেলার সর্বশেষ ইউনিয়ন শোভনদন্ডী। এ ইউনিয়নের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। প্রতিদিন চট্টগ্রাম শহরে নানান প্রয়োজনে এ ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে আসতে হয়। উপজেলা শোভনদন্ডী ছাড়াও পাশের উপজেলা চন্দনাইশের কানাইমাদারী, জোয়ারা খানখানাবাদ, বরমা, বরকলসহ অর্ধলাখেরও বেশি মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসার প্রয়োজনে চট্টগ্রাম শহরে বৈলতলী সড়কে যাতায়াত করতে হয় কয়েকটি গণপরিবহন পরিবর্তন করে।

তবে পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য কোনো সময় বাসের সুবিধা ছিল না। 

বাস চলাচলের সময়সূচি

শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের ছয়দিন প্রতিদিন চার বার এ বাস সেবা চালু থাকবে। তবে যাত্রীর উপর নির্ভর করে এ সেবার পরিধি আরও বাড়বে। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে শোভনদন্ডী ইউনিয়নের মল্লপাড়া (আবাখানা) থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসটি শরৎ মহাজন হাট হয়ে বৈলতলী সড়ক হয়ে পটিয়া বাইপাস সড়ক অতিক্রম করে চট্টগ্রামের শাহ আমানত ব্রিজ এলাকার পর্যন্ত চলাচল করবে। দীর্ঘ ৩০ কিলোমিটারের এ পথে জনপ্রতি বাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ টাকা।

উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ।

রশিদাবাদ এলাকার মোরশেদ টুলু বলেন, ‘এখানকার মানুষের জন্য এটি ভালো খবর। শোভনদন্ডী হতে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বাস সার্ভিস চালু হওয়ার খবরে আমার আনন্দিত। কারণ এখন থেকে পটিয়া, আবার পটিয়া থেকে চট্টগ্রাম— এভাবেই যেতে হতো আমাদের। এখন এ সুবিধা চালু হলে আমাদের অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইকরামুল হক বলেন, এই বাস সার্ভিস চালু হলে আমরা অনেক বিড়ম্বনা থেকে বেঁচে যাব। শোভনদন্ডী হতে চট্টগ্রাম আসতে বেশি ভাড়া গুনতে হয়, সঙ্গে দুর্ভোগও আছে। এ রুটে নতুন বাস চালু হলে আমাদের যাতায়াত সুবিধা বাড়বে। কষ্টও লাঘব হবে।

এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও চিকিৎসা এবং চাকরিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করেন প্রতিদিন। প্রায় সময়ই গাড়ি পাওয়া যায় না। আবার পটিয়া গিয়েও বাসের অপেক্ষায় ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার বাসে উঠলে কখনও কখনও দাঁড়িয়ে যেতে হয়। গুরুতর রোগীদের নিয়ে বাসে যাতায়াত করা বেশি কষ্টকর। শোভনদন্ডী হতে বাস সার্ভিস চালু হলে মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবেন। পাশাপাশি এ এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে।’

ইউপি সদস্য মো. সায়েম বলেন, অনেক দিন ধরেই আমরা এ রকম বাস সার্ভিসের অপেক্ষায় ছিলাম। এখন শুনে ভালো লাগছে শোভনদন্ডী হতে চট্টগ্রামে প্রতিদিন বাস ছেড়ে যাবে। এতে আমাদের কষ্ট কমে আসবে। সময় ও ভাড়া সাশ্রয় হবে। এ প্রথম বারের মতো কোনো জনপ্রতিনিধি এ ধরনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছের। সেজন্য আমরা দিদার ভাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হক বলেন, শোভনদন্ডী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত নতুন বাস সার্ভিস চালু হলে এলাকার হাজারো মানুষের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে। প্রতিদিন সময় অপচয়ের সঙ্গে যাত্রী সাধারণ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। এখন এই দুর্ভোগ লাঘব হবে।

আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, উপজেলা দক্ষিণ প্রান্তের সবশেষ ইউনিয়ন শোভনদন্ডী। এ অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন নানা কাজে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করে। এ বাস সার্ভিস চালু হওয়ার মাধ্যমে চিকিৎসাসহ চট্টগ্রাম শহরে আসা-যাওয়া করা মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘব ও গরিব মানুষের কষ্ট লাগব হবে বলে মনে করি। আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাব।

পটিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দিদারুল আলম দিদার বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল শোভনদন্ডী ইউনিয়নের তথা সারা পটিয়ার মানুষের জন্য কিছু করার। আল্লাহপাক এবার আমাকে সে সুযোগ দিয়েছেন। আমরা স্বপ্ন ছিল শোভনদন্ডী হতে চট্টগ্রাম পর্যন্ত সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বাস সার্ভিস চালু করার। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আগামীকাল রোববার। সকাল থেকেই এ বাস সার্ভিসের কার্যক্রম চালু হবে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!