ভারত সীমান্তে মিরসরাইয়ের কিশোর নিখোঁজ, ডুবুরিদের ৪ ঘণ্টার তল্লাশিও নিষ্ফল

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে নিখোঁজ রয়েছে মো. জাহেদ ইসলাম নামের এক কিশোর।

রোববার (২৩ জুন) রাত ১০টায় মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তীর মেরকুম আমলীঘাট এলাকায় নৌকাযোগে নদী পার হওয়ার সময় নিখোঁজ হন জাহেদ। ওই সময় বাংলাদেশের বিজিবি ও ভারতের বিএসএফের মধ্যে গোলাগুলি চলছিল।

জাহেদ (১৭) ওই এলাকার ফারুক ইসলামের ছেলে।

সোমবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় উদ্ধার অভিযানে নামে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি ডুবুরি দল। রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জাহেদের খোঁজ মেলেনি।

জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মেরকুম আমলীঘাট এলাকায় বাগান থেকে লেবু তুলে ফেরার পথে নৌকা থেকে পড়ে জাহেদ নামের এক তরুণ নিখোঁজ হয়। এরপর তার পরিবার ও এলাকার লোকজন খোঁজ করে না পেয়ে বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দিলে সোমবার বেলা ১১টা থেকে তারা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে দুপুর ২টা থেকে চট্টগ্রাম জেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।

তবে জাহেদের বাবা ফারুক ইসলাম বলেন, ‘আমলীঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরাইপথে চিনি পাচার করা হয় প্রায়। আমার ছেলেসহ ২ থেকে ৩০০ জন শ্রমিক ছিল। তারা রোববার সেখানে চিনি আনতে গিয়েছিল। তখন বিজিবি-বিএসএফ মুখোমুখি অবস্থান নিলে গোলাগুলি শুরু হয়। আমার ছেলে কানে কম শুনে এবং সাঁতার জানতো না। সবাই যে যার মতো পালিয়ে গেলেও আমার ছেলে কি নদীতে পড়ে গেছে, নাকি বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে—সেটা আমি এখন পর্যন্ত জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এবং জাহিদের মা সারারাত নদীর পাশে বসেছিলাম। কিন্তু আমার ছেলের দেহ কোথাও দেখিনি।’

করেরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজাদ উদ্দিন জানান, জাহেদ নামে ছেলেটি নিখোঁজের বিষয়ে আমাকে জানানো হলো বিষয়টি বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা হয়। তারা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। নিখোঁজের প্রায় ২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন উদ্ধার করা যায়নি। লোকমুখে শুনেছি, চিনি পাচারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো নিখোঁজ ছেলেটি।

বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জয়নাল আবেদীন তিতাস জানান, ফেনী নদীতে এক ছেলে নিখোঁজের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারের কাজ শুরু করি। পরে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে প্রায় ৪ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ তরুণের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো ম্যানস্ ল্যান্ড হওয়ায় এখানে সন্ধ্যার পর আর অভিযান করা সম্ভব না। তাই আজকের (সোমবার) মতো অভিযান এখানে সমাপ্ত।

তিনি আরও বলেন, ‘নদীতে কিছু কুম আছে যেগুলো অনেক গভীর। কুমের ভেতরে হয়তো আটকে যেতে পারে। যদি নিখোঁজ তরুণের দেহ পাতলা, তাহলে খুঁজে পেতে খুবই দুষ্কর। কুমে আটকে থাকলেও পেতে কষ্ট হবে। আগামীকাল সকাল থেকে আমাদের উদ্ধার অভিযান আবার শুরু হবে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!