বুয়েটপাশ ইঞ্জিনিয়ার সৌদি আরব গিয়েই ‘ইমাম মাহাদী’, ঢাকায় মামলা

নিজেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধর এবং ‘ইমাম মাহাদী’ হিসেবে দাবি করা এক সৌদি প্রবাসীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে বাংলাদেশে। স্বঘোষিত ওই ‘ইমাম মাহাদী’র নাম মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান।

শনিবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর রমনা থানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) দায়ের করা মামলায় ওই প্রবাসীর বিরুদ্ধে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

কাউন্টার টেরোরিজম কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যামূলক মনগড়া ও ভিত্তিহীন বক্তব্য অডিও-ভিডিও আকারে ফেসবুকসহ বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল ও ‘তাকওয়া অনলাইন টিভি’তে প্রচার করে আসছিলেন মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান। এতে তিনি নিজেকে ‘ইমাম মাহাদী’ হিসেবে দাবি করেন। ‘স্বপ্নের মাধ্যমে’ পাওয়া এই দাবি ছাড়াও মুস্তাক মুহাম্মদ নিজেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধর হিসেবেও দাবি করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘ইমাম মাহদি মদিনার পূর্বদিকের কোনো দেশ থেকে আসবেন। মদিনার পূর্বদিকে সোজা রেখা টানলে সেটা বাংলাদেশের টঙ্গী পর্যন্ত আসে, যেখানে আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে টঙ্গী থেকে পালিয়ে আমি মক্কায় চলে আসি।’ এই বার্তার সঙ্গে তিনি একটি গুগল ম্যাপের ছবিও জুড়ে দেন, যেখানে মক্কা থেকে ঢাকার টঙ্গী পর্যন্ত একটি দাগ টানা হয়েছে।

প্রচারিত অডিও-ভিডিওতে কথিত এই ‘ইমাম মাহাদী’ তার কাছে কথিত ‘বাইয়াত’ গ্রহণেরও আহ্বান জানান। কাউন্টার টেরোরিজম কর্মকর্তাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গিয়ে মুস্তাক মুহাম্মদের অনুসারী হিসেবে যোগ দেন। এদিকে আরও ১৯ জন তরুণ কথিত এই ‘ইমাম মাহাদী’র বায়াত গ্রহণ করতে সৌদি আরব যাচ্ছেন— এমন খবর পেয়ে গত ৪ মে ও ৭ মে কাউন্টার টেরোরিজম তাদের আটক করে।

জানা গেছে, মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান ২০০৬ সালে বুয়েট থেকে স্নাতক শেষ করার পর মালয়েশিয়ায় গিয়ে স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৬ সালে তিনি উগান্ডা যান। সেখানে একমাস অবস্থান করার বাংলাদেশে ফিরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এরপর ২০১৮ সালে অক্টোবর মাসে তিনি সৌদি আরব গিয়ে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদী’ হিসেবে ঘোষণা করেন। চার সন্তানের জনক মুস্তাক মুহাম্মদ এর আগে তাবলিগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!