ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রীকে হত্যা, শিক্ষকের মৃত্যুদণ্ড

রাঙামাটিতে ২য় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে হত্যা মামলায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অপর একটি ধারায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যা আগামী ৬০ দিনের মধ্যে জমা দেওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম অংবাচিং মারমা ওরফে আবাসু ওরফে বামং (৪৬)।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নারী ও শিশু নির্বাতন দমন ট্রাইব্যুনাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এইএম ইসমাইল হোসেন এ রায় দেন।

জানা গেছে, আসামি অংবাচিং মারমাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ এর ৯(৪)(খ) ধারার অপরাধের দায়ে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা জরিমানার দেওয়া হয়। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ জমারে নির্দেশ দেওয়া হয়। আসামির পরিশোধিত অর্থ ভুক্তভোগীর বাবা-মা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবেন।

আদালতসূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির চন্দ্রঘোনা থানার ২ নম্বর রাইখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কোদালা এলাকার বাসিন্দা ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতেন অংবাচিং মারমা।

২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী প্রাইভেট পড়তে গেলে অন্য শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন অংবাচিং। পরে তাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে মুখ চেপে ধরে গলায় কাপড় পেঁচালে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় তার। হত্যার পর বস্তায় ভরে ঘরের মাচায় লাশ তুলে রাখে অংবাচিং।

পরে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে খুঁজতে আসলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট পড়িয়ে ছুটি দিয়েছেন বলে জানান অংবাচিং। কিন্তু তার কথায় সন্দেহ হলে নজরদারিতে রাখে এলাকাবাসী। ঘটনার পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টার সময় বস্তায় ভরে ভুক্তভোগীর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় অংবাচিংকে হাতেনাতে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।

ওইদিনই ভুক্তভোগীর বাবা বাদি হয়ে চন্দ্রঘোনা থানা অংবাচিং মার্মাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

এই মামলায় ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করে চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আসামির ফাঁসির রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!