দিনে গ্যারেজে মিস্ত্রি, রাতে করে সিএনজি অটোরিকশা চুরি

অবশেষে ধরা, পুলিশের সহায়তায় বাঁচলো চালকের প্রাণ

দিনে তারা কাজ করে গাড়ির গ্যারেজে, রাত হলেই পাল্টে যায় তাদের ভোল। যাত্রী বেশে সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে নিয়ে যায় নির্জন স্থানে। নেওয়ার পথে সিএনজি চালককে বিষাক্ত স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে কেড়ে নেয় তার সর্বস্ব এবং আয়ের একমাত্র সম্বল সিএনজি অটোরিকশাটিও। এ কাজকেই নিজেদের পেশা ও নেশা বানিয়েছে মো. রাজিব (২৫) ও নুরন্নবী শেখ (৪০) নামে চোরচক্রের দুই সদস্য।

তবে, প্রতিবার পার পেয়ে গেলেও এবার ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সিএনজি চোর চক্রের এই দুই সদস্যকে আটকের পর আদালতে সোপর্দ করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ।

জানা যায়, নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন এক কিলোমিটার এলাকায় একটি মোটর পার্টসের গোডাউনে একসঙ্গে থাকে রাজিব ও নুরন্নবী। দিনে গাড়ির গোডাউনে চাকরি করলেও রাত হলে পাল্টে যায় তাদের পেশার ধরন, নগরীতে অন্ধকার নামলেই তারা হয়ে ওঠে যাত্রীবেশী চোর।

পুলিশ জানায়, যাত্রীবেশে দুই চোর সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে কালামিয়া বাজার ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তারা সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. এমরানকে পিছন থেকে বিষাক্ত জলীয় পর্দাথ স্প্রে করে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। চালক এমরান স্প্রে করার কারণ জানতে চাইলে চোর সদস্যরা তাকে গাড়ি থামাতে বলে।

জলীয় পদার্থ স্প্রে’র কারণে সিএনজি অটোরিকশা চালকের মাথা ঘুরতে থাকলে তিনি চোরদের উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন। চালক নিজেকে সামলে গাড়ি চালিয়ে বাকলিয়া থানাধীন লিজা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে রাখেন। সিএনজি অটোরিকশার বাইর থেকে হুক লাগানো ছিলো বিধায় ভিতর থেকে চোররা চিৎকার চেঁচামেচি ও গ্রিল ধরে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে, তখন পুলিশের একটি টহল টিম ঘটনাটি দেখে এগিয়ে আসে।

তারা চালকের কাছ থেকে ঘটনা জেনে চোর চক্রের দুই সদস্যকে আটক করে। এবং বিষাক্ত জলীয় পর্দাথের স্প্রের কারণে মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা চালক মো. এমরানকে প্রথমে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্থ চালক মো. এমরান নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে বলে জানা যায়। বর্তমানে তিনি নগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তারপুল এলাকায় থাকেন। অপরদিকে আটক রাজিব মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার মো. রুবেল শেখের পুত্র, অন্যজন মো. নুরন্নবী শেখ গোপালগঞ্জ জেলার, সদর থানার আকরাম শেখের পুত্র। তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে চোর আটকের ঘটনা বর্ননা দিতে গিয়ে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নেজাম উদ্দীন বলেন, আমরা দুই সিএনজি অটোরিকশা চোরকে আটক করেছি, এদের পেছনে কাজ করা সম্পূর্ণ চক্রকে আটক করার জন্য আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি।

আটককৃতেদর কাছ থেকে আরো বিষদভাবে তথ্য জানার জন্য আমরা আদালতের কাছে ০৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি, আমরা আশা করি এই চক্রের সব সদস্যকে আটক করতে পারবো।

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!