চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৮৫ রপ্তানি চালান বিদেশে পাচার ঢাকার প্রতিষ্ঠানের

৭ কন্টেইনার পণ্য জব্দ

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৮৫টি রপ্তানি চালান বিদেশে পাচার করেছে ঢাকার ‘সাবিহা সাইকি ফ্যাশন’। যার মধ্যে প্রত্যেকটি চালানেই করা হয়েছে জাল-জালিয়াতি। এতে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে শত কোটি টাকা।

শত কোটি টাকার পণ্য চালানে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে মাত্র ২২ কোটি। এতে সন্দেহ হয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের। ফলে তদন্তে নামে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ৯ ফেব্রয়ারি ৪০ ফুট দীর্ঘ ৭ কনটেইনারের এসব পণ্য আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা। যার ওজন ১১৮ টন, ঘোষিত মূল্য ৩ কোটি টাকা। আটক চালানের প্রকৃত মূল্য বেশি হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। চালানে টি-শার্ট ও লেডিস ড্রেস রফতানির ঘোষণা থাকলেও কায়িক পরীক্ষায় বেবি ড্রেস, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, লেগিন্স, শালসহ ঘোষণা বহির্ভূত অসংখ্য পণ্য পাওয়া গেছে।

তবে ঠিক কত কোটি টাকা ফাঁকি দিয়ে বিদেশে পাচার করেছে, সেই তথ্য এখনও পাওয়া না গেলেও ওই কোম্পানির ৮৫টি চালানে ঘোষিত পণ্য ছিল ৮৮২ মেট্রিক টন। যার টাকার ঘোষণা ছিল মাত্র ২২ কোটি টাকা। চালানগুলো মালয়েশিয়া, সুদান, ইউএই, ত্রিনিদাদ, টোবাগো পাঠানো হয়েছিল।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে একই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মোল্লার টেকের ‘সাবিহা সাইকি ফ্যাশন’ ৯৪টি চালানের খোঁজ পেয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৮৫টি বিদেশে চলে গেছে। যার পরিমাণ ৮৮২ মেট্রিক টন, ঘোষিত মূল্য ২২ কোটি টাকা। উত্তর পতেঙ্গার এসএপিএল (ওসিএল) কনটেইনার ডিপোতে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ১৫টি বিল অব এক্সপোর্ট সংক্রান্ত দলিল পর্যালোচনায় জালিয়াতির সত্যতা পান।

কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, ঢাকার মোল্লার টেকের সাবিহা সাইকি ফ্যাশন রপ্তানি চালানের কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করলেও বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসেনি। ওই চালানগুলোতে মানি লন্ডারিং হয়েছে। বিল অব এক্সপোর্ট সংশ্লিষ্ট ইএক্সপিগুলো একই ব্যাংকের অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা। ভুয়া ইএক্সপি এবং এলসি কিংবা সেলস কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছিলো।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার বলেন, ‘ঢাকার মোল্লার টেকের সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামেমাত্র মূল্য দিয়ে বেশি পরিমাণ পণ্য পাচার করেছে বিদেশে। এতে তারা মানি লন্ডারিং করেছে। তবে কি পরিমাণ মানি লন্ডারিং হয়েছে, সেটি তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

এদিকে অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!