চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে থাকা জীর্ণশীর্ণ ‘নিলাম গোলা’ শেষ পর্যন্ত ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তার আগেই অবশ্য তৈরি হয়ে গেছে নতুন ‘নিলাম গোলা’। বন্দরে কাস্টমসের সব মালামাল এই নিলাম গোলাতেই রাখা হয়। সেখানে এখনও রয়েছে নিলামযোগ্য ১৯০টি গাড়ি। আছে মোটরসাইকেল, মেয়াদোত্তীর্ণ গুঁড়ো দুধ, প্রসাধনী, কাপড়-কম্বলের মতো পণ্যও। এসব পণ্য সময়ে সময়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলামে তোলে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পুরনো ‘নিলাম গোলা’য় ২০ বছরেরও পুরনো মালামাল সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে বেশি পুরনো পণ্যগুলো ধ্বংস করে ফেলা হবে। অপেক্ষাকৃত ভালো পণ্যগুলো নতুন নিলাম গোলায় নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেগুলো নিলামে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে কাস্টমসের।
চট্টগ্রামের কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, ‘পুরাতন নিলাম গোলাটি সরিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাস্টমসের নিলাম শাখার পাশে। ওখানে প্রায় পাঁচ একর ভূমির ওপর নিলাম শেড তৈরি করে দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পুরাতন গোলা থেকে পুরাতন বা নষ্ট মালামালগুলো ধ্বংস করা হবে। যেসব মালামাল সংরক্ষণ করার মতো— সেগুলো নতুন গোলায় রাখা হবে।’
এদিকে বন্দরের পুরাতন গোলা থেকে মালামাল সরাতে কাস্টমসের দুই যুগ্ম কমিশনারকে সদস্য করে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন কাস্টমস কমিশনার। কমিটির সদস্যরা হলেন মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান ও মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ। তাদের তত্ত্বাবধানে স্থানান্তর হবে গোলাটি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পুরাতন গোলার মাল সরানো হবে বলে জানা গেছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের পুরনো নিলাম গোলায় পড়ে থাকা অনেক পণ্য নষ্ট হয়ে ওপরে রীতিমতো ঘাস জন্মেছে। অনেক পণ্যের ওপর গজিয়েছে গাছও। মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় পড়া অনেক পণ্য বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে এ গোলায়। সেখানে ১৯৯৬-১৯৯৭ সালের মামলায় পড়া পণ্যও রয়ে গেছে এখনও— যেসব মামলা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।
কাস্টমসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার ফয়সাল বিন রহমান বলেন, ‘মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পণ্যগুলো নতুন অকশন গোলায় সংরক্ষণ করা হবে। কিন্তু যেগুলোর বিপরীতে কোনো মামলা নেই এবং পণ্যও ভালো অবস্থায় আছে সেগুলো আগামী নিলামে তোলার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’
পুরাতন অকশন গোলায় ১৯০টি গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ড্রাম ট্রাক, মিক্সার ট্রাক, কার, মোটর সাইকেল। এছাড়া রয়েছে ফটোকপি মেশিন, মেয়াদোত্তীর্ণ গুঁড়ো দুধ, প্রসাধনী, কাপড় কম্বলসহ আরও নানা পণ্য।
কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, পাঁচ একর ভূমিতে ছিল পুরাতন নিলাম গোলাটি। এর আদলে পাঁচ একর ভূমিতে নতুন নিলাম গোলা তৈরি করা হয়েছে কাস্টমসের নিলাম শাখা এলাকায়। পুরাতন গোলাটি ইতিমধ্যে জীর্ণশীর্ণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। এ স্থানে কনটেইনার শেড করতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী ও আমদানিকারক এসএম শামীম বক্স বলেন, ‘বন্দরের অপারেশন এলাকার বাইরে কাস্টমস বিভাগের জন্য নতুন অকশন গোলা তৈরি করে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। অকশন গোলায় কন্টেইনার রাখার সুবিধাও রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কাস্টমস বিভাগের পুরাতন গোলা স্থানান্তর হলে নিলামের কাজ আরো গতিশীল হবে। অকশন শাখার পাশে অকশনের মালামাল প্রদর্শনীর জন্য রাখা গেলে বিডাররা দেখে শুনে অকশনে অংশ নিতে পারবে। আবার পুরাতন অকশন গোলায় কন্টেইনার রাখা হলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে আরও গতি আসবে।’
এএস/সিপি