চট্টগ্রামে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ায় মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড আরেক এক আসামিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত বেলাল হোসেন (২৭) নামের ওই যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও টিটু সাহা (৪৬) নামের এক আসামিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন।

বেলাল হোসেন কুমিল্লার মুরাদনগর থানার কোরবানপুর গ্রামের মন মিয়ার ছেলে। টিটু সাহা একই থানার বাখরাবাদ রঞ্জিত মাস্টার বাড়ির নেপাল সাহা’র এর ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নগরীর দক্ষিণ নালাপাড়ায় খাসির মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম তার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৭), মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী (১০), শ্যালক আলাল ও দুই ছেলেসহ ভাড়া থাকতেন।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৭ মে সকালে শাহ আলম দোকানে চলে যান। সকাল ৯টার দিকে তার দুই ছেলে স্কুলে যায়। তখন ঘরে ছিল নাছিমা ও মেয়ে রিয়া। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শাহ আলমকে তার শ্যালক আলাল ফোন করে জানান, নাছিমা ও রিয়া হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

শাহ আলম ঘরে গিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ঘরে থাকা ১ লাখ ১১ হাজার টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও দুটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায় হত্যাকারী। ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় শাহ আলম বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৭ মে হত্যাকাণ্ডের দিন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শাহ আলমের খালাতো ভাই বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নাছিমা বেগমের স্বর্ণালংকার নগরীর বাকলিয়া ইসহাকের পুল এলাকায় একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহার কাছে বিক্রি করেছিলেন বেলাল হোসেন। পরে টিটু সাহাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু বলেন, ‘বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। লুটকৃত স্বর্ণ কিনে নিজের কাছে রাখায় টিটু সাহাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত থাকায় তাদের সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়।’

আরএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!