চট্টগ্রামে গার্মেন্টস কর্মীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই, বেতন নিয়ে শঙ্কা

ব্যাংক একাউন্ট খুলতেও হয়রানি

চট্টগ্রামে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ করা হয়েছে গার্মেন্টসের। এতে এ দুর্যোগের সময়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন শ্রমিকরা। এতোদিন হাতে হাতেই বেতন নিতেন গার্মেন্টস কর্মীরা। এখন হঠাৎ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার তাগিদ এসেছে এমন এক সময়ে, যখন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া আর সবকিছুই বলা চলে বন্ধ।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বেতন না দিয়েই চট্টগ্রামে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পোশাক কারখানাগুলো। বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে বায়েজিদ এলাকায়।

এ ব্যাপারে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালক মোহাম্মাদ আতিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রামের গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতনের টাকা নগদে হাতে হাতে গ্রহণ করেন। সরকারি সাধারণ ছুটি থাকায় কারখানা খোলা যাচ্ছে না। ফলে গার্মেন্টস খোলার আগে শ্রমিকরা বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। তবে কিছু কিছু গার্মেন্টস মালিক বেতন পরিশোধও করেছেন বলে শুনেছি।

প্রসঙ্গত, শ্রমিকদের ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে বেতন পরিশোধ করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ নেতা আতিক বলেন, এপ্রিল মাস থেকে বেতন ব্যাংকে দেবে। কিন্তু মার্চের বেতন নগদে পরিশোধ করতে হবে। সরকারি নির্দেশনা থাকায় অনেক শ্রমিক ব্যাংক একাউন্ট করতে তোড়জোড় শুরু করেছেন। কিন্তু সব বন্ধ থাকায় একাউন্ট করতে বিপাকে পড়েছে শ্রমিকরা। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে গত মাসের বেতন না পাওয়ায় ধার দেনা করে চলছে পোশাক শ্রমিকদের বেশিরভাগেরই সংসার। বাসা মালিকরা চলতি মাসের ভাড়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। দ্রুত বেতন না পেলে তারা অনেকে বিপদে পড়বেন। আগে দোকানিরা বাকি দিতেন। এখন গার্মেন্টস বন্ধ থাকায় তারাও বাকি দিতে রাজি হচ্ছেন না। তাই সামনের দিনগুলোর কথা ভেবে নির্ঘুম রাত পার করছেন অনেকে।

গার্মেন্টস শ্রমিক জিয়াউল হাসান বলেন, ‘যা বেতন পাই, ওই দিনেই গিয়ে বাসা ভাড়া, বাকি-বকেয়া শোধ করে হাতে টাকা থাকে সামান্যই। কখনও কখনও সব টাকাই শেষ হয়ে যায়। পুরো মাস আবার বাকিতে সংসার চলে।’

মোবাশ্বেরা বেগম বলেন, প্রতি মাসে এভাবে ঘাটতি থেকে আমরা বের হতে পারি না। কখনও ওভারটাইম করে বেশি আয় করারা চেষ্টা করি ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে। কাটিয়ে উঠলে আবার অসুখ-বিসুখে আবার ঘাটতি দেখা দেয়।

গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা অপু দাস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমরা মালিকদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। নির্দিষ্ট সময়ে বেতন দিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন অনেক কোম্পানি। সরকারি ছুটির এ সময় পর্যন্ত আমরা ধৈর্য্য ধরছি। মানবিক দিক চিন্তা করেই শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে। যদি প্রতিশ্রুতির সময়ের মধ্যে বেতন না দেয় তাহলে শ্রমিকরাও আন্দোলনে যাবে।

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!