চকবাজারের হাসপাতালে নবজাতকসহ মাকে আটকে রাখার হুমকি বাড়তি বিলের প্রতিবাদ করায়

চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের পিপলস হাসপাতালে রোগীর কাছ থেকে বেশি বিল নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। পরে বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যম থেকে ফোন করলে তড়িঘড়ি করে বিল কমিয়ে রোগীকে রিলিজ করা হয়।

তবে এর আগে প্রতিবাদ জানালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা না পেলে বাচ্চা ও মাকে আটকে রাখার হুমকি দেয়।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কালামিয়া বাজারের সন্তানসম্ভবা রিফাত ফাতেমা পিপলস হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি ডা. কুসুম আক্তারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এরপর ডাক্তারের পরামর্শেই ভর্তি হন হাসপাতালে। বিকাল সাড়ে ৪টায় ফাতেমা স্বাভাবিক প্রসবে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। ডাক্তার প্রসূতিকে সন্ধ্যায় নিয়ে যেতে বলেন। এরপর স্বজনদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১৮ হাজার ১৪২ টাকার বিল।

বিলে দেখা গেছে, রেজিস্ট্রেশন ফি ১২০০ টাকা, সিট ভাড়া ২ হাজার টাকা, মেডিসিন ৯১০ টাকা, ওটি অন্যান্য ৬০০ টাকা, নরমাল ডেলিভারি চার্জ ৮ হাজার টাকা, আসিসট্যান্ট নার্স ফি ৫০০ টাকা, লেবার রুম চার্জ ১৪০০ টাকা, বার্থ সার্টিফিকেট ১০০ টাকা, বেবি কট ১০০ টাকা, সার্ভিস চার্জ ৩ হাজার ৩৩২ টাকা লেখা রয়েছে।

এ বিলের ছবি দিয়ে চট্টগ্রামভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ‘হেল্পলাইন চিটাগং‘-এ পোস্ট করেন প্রসূতির স্বজন রাইয়ান রিয়াজ। সেটি দেখে কথা হয় রিয়াজের সঙ্গে।

রিয়াজ জানান, বিলের বিষয়ে আকাউন্টসে জিজ্ঞাসা করলে সেখান থেকে খারাপ ব্যবহার করা হয়। তারা বলে, যা বিল এসেছে তা না দিলে প্রসূতি মা ও বাচ্চাকে আটকে রাখা হবে।

এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার মোক্তার হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘সার্ভিস চার্জ মোট বিলের ২২ শতাংশ। এটি সরকারি কোনো নিয়মে করা না। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের করা বিল কাঠামো। বিলটিতে কিছু ডিসকাউন্ট করা হবে।’

এরপর চার হাজার টাকা বিল কমিয়ে ১৪ হাজার টাকা দিতে বলা হয় রিয়াজকে। এছাড়া এ বিষয় নিয়ে আর জলঘোলা করতেও নিষেধ করা হয় তাকে।

এর আগে ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর প্রয়োজনীয় বিল-ভাউচার না দিয়ে এক রোগীর কাছ থেকে অপরাশেন খরচ বাবদ দেড় লাখ টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে পিপলস হাসপাতালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সেসময় অভিযান পরিচালনার শেষে ম্যাজিস্ট্রেট আলী হাসান বলেছিলেন, ‘এক রোগীর কাছ থেকে অপারেশন খরচ বাবদ এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৯ টাকা বিল আদায় করতে দেখেছি। সেখানে ৯০ হাজার টাকা অপারেশন টিম চার্জ এবং বাকি টাকা সার্ভিস চার্জ হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করেনি। এছাড়া একজন রোগীকে তার প্রাপ্য সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা ঘাটতি দেখেছি। আবার বিভিন্ন রোগীর কাছ থেকে আদায় করা বিল-ভাউচারে গরমিল পেয়েছি। এজন্য হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. সুভাষ চন্দ্র সূত্রধরের উপস্থিতিতে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

আইএমই/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!