সাতকানিয়ায় করোনা রোগীর ঘরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা

চট্টগ্রামে সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশার ইছামতি আলীনগরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক যুবকের বাড়িসহ পাশ্ববর্তী কয়েক বাড়িতে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু নেতাকর্মীর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওই যুবকসহ করোনা আক্রান্ত এই ৫ জন ১৪ এপ্রিল শনাক্ত হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পাঠানো অ্যাম্বুলেন্স ওই ৫ জনকে জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আনতে গেলে স্বজনরা আহাজারি করেন। রোগীদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ইছামতি এলাকা ত্যাগের পরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, পশ্চিম ঢেমশার ইছামতী আলীনগরের সাবেক মেম্বার জসীম, রোমানের বাড়ি, আবুল হোসেনের বাড়ি, আব্দুল খালেকের বাড়ি, আবদুল আজিজ, জাফর আহমদের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সন্ধ্যা ৭টায় অতর্কিত হামলা চালিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী। এ সময় তারা দেশীয় বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। ফাকা গুলি ছুঁড়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে আবার হামলা করারও হুমকি দেয়। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

হামলায় দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিল্লুর রহমান, স্থানীয় যুবলীগ নেতা জুয়েল, জিলান, সাগর, ইসমাইল শহীদ ফকির জাহেদ নেতৃত্ব দেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

করোনা আক্রান্ত যুবকের মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেসহ অন্যদের এলাকা থেকে সরিয়ে চট্টগ্রাম শহরে নেওয়ার জন্য অনেকেই ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। তারাই হামলা চালিয়েছে। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার সময় কান্না করার অপরাধে আজ বাড়িঘর ভাঙচুর করলো। বিচার এখানে না পেলেও আল্লাহ করবে এই বিচার।

৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফরমান ঘটনার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মানবতা আজ প্রবাসে।

হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলামও না। এ বিষয়ে কিছু জানিওনা। তবুও কেন আমাকে জড়ানো হচ্ছে জানি না।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবির বলেন, রোগী আনতে অ্যাম্বুলেন্স গেলে অভিভাবকরা তাদেরকে ছাড়তে চায়নি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তা আবার চেয়ারম্যান-মেম্বারের মধ্যস্থতায় সমাধানও হয়েছে। তারপরও যদি কেউ কোন অভিযোগ করেন আমরা বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখবো। কারণ কোন রোগীই অচ্ছুৎ নয়, তাদের পাশে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে থাকতে হবে আমাদের।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!