ভোটে ‘অপকর্মের’ স্বীকারোক্তি দিয়ে তোপের মুখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি
‘এমপিকে জেতাতে অপকর্ম করেছি’
‘৭ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী, প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সন্তান মাহবুব উর রহমান রুহেলকে জেতানোর জন্য আমরা অনেক অপকর্ম করেছি। ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো অপকর্ম ছাড়া ভোটকেন্দ্র খোলা রাখবো’—মিরসরাই উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা সভায় কথাগুলো বলেছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া। এই বক্তব্যের কারণে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।
বুধবার (১৫ মে) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তার বক্তব্যের কারণ দর্শাতে বলা হয়।
চিঠিতে জাহাঙ্গীরের উদ্দেশ্যে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত আপনার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং তা সংগঠনের রীতিনীতি ও আদর্শ পরিপন্থী। শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে প্রদত্ত আপনার বক্তব্য সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এই অবস্থায় জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার ব্যাখাসহ লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে জবাব পাঠানোর জন্য সাংগঠনিক নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় তাকে।
গত ৮ মে অনুষ্ঠিত হওয়া মিরসরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী শেখ আতাউর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া। এর ধারাবাহিকতায় ২৯ এপ্রিল মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এক কর্মীসভায় স্থানীয় এমপি মাহবুব উর রহমান ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া।
ওই সমাবেশে জাহাঙ্গীর বলেন, গত ৭ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী, প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সন্তান মাহবুব উর রহমান রুহেলকে জেতানোর জন্য আমরা অনেক অপকর্ম করেছি। ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো অপকর্ম ছাড়া ভোটকেন্দ্র খোলা রাখব।
তার এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা জাহাঙ্গীরের বক্তব্য লুফে নিয়ে সংসদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন।
বিএস/ডিজে