ফল জালিয়াতি নিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সচিবের বিরুদ্ধে তদন্তে আর বাধা নেই

হাইকোর্টের আদেশ চেম্বার জজে স্থগিত

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে হওয়া তদন্ত কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের রিট স্থগিত হয়ে গেছে চেম্বার জজ আদালতে। ফলে ওই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে আর কোনো বাধা রইলো না।

সোমবার (১০ জুন) আপিলের শুনানি শেষে চেম্বার জজ এম ইনায়েতুর রহিমের আদালত হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করেছেন।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান সচিব ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে ওঠা ফল জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এর প্রায় পক্ষকাল পরে ৪ জুন সেই তদন্ত স্থগিত করার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ তদন্ত কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন। এরপর ওই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে আপিল করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি তৌহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ তার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। তিনি রিটে বলেছেন বেনামি চিঠির ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পরে সেই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট তদন্ত কমিটি স্থগিত করেন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা চেম্বার জজ আদালতে আপিল করি। সোমবার শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশটা স্থগিত করেছেন। এর ফলে এখন আর তদন্ত চালিয়ে নেওয়ায় কোন বাধা নেই।’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের সন্তানের ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য ‘অবৈধভাবে’ আবেদন করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার ছেলে। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের এইচএসসি ফল জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। মাউশির মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন উইংয়ের পরিচালক আমির হোসেনকে আহ্বায়ক এবং সহকারী পরিচালক (এইচআরএম) আশেকুল হক এবং ইএমআইএস সেলের খন্দকার আজিজুর রহমানকে সদস্য করে গঠন করা হয় এই তদন্ত কমিটি। গত ৩ জুন সকালে প্রথমবারের মতো কমিটির দুই সদস্য বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তদন্ত কমিটি এ সময় ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার মার্কশিট চাইলে তা দিতে পারেনি বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে বেরিয়ে আসে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেছে দুই পরীক্ষার্থী।

মার্কশিট খোয়া যাওয়ার বিষয়ে পরদিন ৪ জুন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দিদারুল আলম। জিডিতে মো. দিদারুল আলম উল্লেখ করেন, ‘আমার অফিস কক্ষে তিনটি ট্রাঙ্কে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা-২০২৩ এর শিক্ষার্থীদের লক্ষাধিক নম্বরফর্দ রক্ষিত ছিল। গত ১৯ মে সকাল ১০টার দিকে দেখা যায় যে, ওই তিনটি ট্রাঙ্কের মধ্যে একটি ট্রাঙ্কের লাগানো তালা নেই। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান মহোদয়কে লিখিতভাবে অবহিত করি। পরবর্তীতে ৩ জুন বিকাল ৩টার সময় ভাঙা ট্রাঙ্কটি তদন্ত কমিটির নির্দেশক্রমে শিক্ষা বোর্ডের দু’জন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ট্রাঙ্কে শিক্ষার্থীদের দুটি নম্বরফর্দ নেই।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!